টানেলের মাধ্যমে উন্নয়নের নতুন ধাপে প্রবেশ করল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নয়নের নতুন ধাপে প্রবেশ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের মধ্যে টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে.. এরপর এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাবে। যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

রোববার চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম সড়ক সুড়ঙ্গপথ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের’ খননকাজ ও লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের পরে পতেঙ্গা লিংক রোডে এক সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

এই লিংক রোডটি কক্সবাজার-পতেঙ্গা চারলেন সড়কের সাথে যুক্ত করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এজন্য আরও ১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত রাস্তা নির্মাণ করতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সে পরিকল্পনাও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সচিবের সাথে আমি ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। টানেলটি চট্টগ্রাম-আনোয়ারা এবং লিংকরোডটি পতেঙ্গা চারলেনের সাথে আনোয়ারাকে যুক্ত করবে। এতে কক্সবাজারমুখী যাত্রাও সহজ হবে।’

চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে বন্দরনগরীর জনগণ খুব সহজে ও দ্রুত বিমানবন্দরে যেতে পারবেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নে এই দুই প্রকল্প ব্যাপক অবদান রাখবে, যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের জন্য কাজ করতে চাই এবং এ উন্নয়নই হলো বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।

চট্টগ্রামকে সকল বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য যা প্রয়োজন, সরকার তা করবে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি হবে মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত, যা খুবই উপকারী হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টানেলটি কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই সহজ করবে না, এটি ব্যবসা ও বাণিজ্যকে সমৃদ্ধ করবে এবং এ এলাকার শিল্পায়ন ঘটাবে। এটি মাথায় রেখেই আমাদের সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম করা হচ্ছে।’

চট্টগ্রাম শুধু বাণিজ্যিক নগর নয় এটি সৌন্দর্যের নগরী উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শহর। আমরা এই শহরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।

দেশের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার তৃণমূল পর্যন্ত উন্নয়ন করতে চায়। যাতে করে গ্রামীণ জনগণ শহরের মতো সুযোগ সুবিধা পায়।

চট্টগ্রামের প্রয়াত সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিনকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনিই এ টানেলটি নির্মাণের জন্য আন্দোলনে নেমেছিলেন।

এসময় পদ্মাসেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাকে ও তার পরিবার নিয়ে কলঙ্ক ছড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বব্যাংকে চ্যালেঞ্চ ছুঁড়ে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে বলেছি। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংকের এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমার নামে পদ্মাসেতু চাই না। কোনো কাঠামোতে আমার নামের প্রয়োজন নেই। আমি শুধু এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ