টেলিভিশনে এই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের উপস্থাপক

সারা বিশ্বে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের বড় ধরনের বৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয়। চাকরি পাওয়া তাদের জন্য রীতিমতো অকল্পনীয়। তাই অনেকেই রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি, বিয়ে বাড়িতে নাচানাচি বা বেশ্যাবৃত্তির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকে।

কিন্তু এবার সে বৈষম্যের রীতি ভেঙে প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে উপস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো পাকিস্তানি টেলিভিশন চ্যানেলে।

হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, গত শুক্রবার এই উপস্থাপকের প্রথম অনুষ্ঠান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘কোহিনুর’ -এ প্রচারিত হয়। ৩ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ওইদিন তিনি উপস্থাপনা করেন। সাংবাদিকতায় স্নাতক পাস করা মারভিয়া মালিক উপস্থাপনার আগে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন।

এ বিষয়ে টেলিভিশন চ্যানেলটির মালিক জুনায়েদ আনসারী জানান, মারভিয়াকে মেধাগত যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে লৈঙ্গিক পরিচয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

মারভিয়া জানান, চাকরি পাওয়ার খবরে তিনি আনন্দে চিৎকার করতে চেয়েছিলেন। বলেন, আমি নিজের জন্য এই স্বপ্ন দেখেছিলাম। তা অর্জনের জন্য প্রথম সিঁড়ি পার হলাম আমি। আমার চাকরি পাওয়া দেশের হাজারো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কর্মসংস্থানে সহযোগিতা করবে।

পাকিস্তানে ২০১৬ সালের জুন মাসে তৃতীয় লিঙ্গের এক আন্দোলনকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল দেরিতে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কারণে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না আলিশা নামের ২৩ বছরের ওই রোগীকে নারী না পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হবে।

এরকম নানা ধরনের বৈষম্যমূলক ঘটনার প্রেক্ষিতে মার্চ মাসের শুরুতে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার রক্ষায় প্রস্তাবিত একটি বিলে সম্মতি দেয় পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি। এতে তাদের লিঙ্গ পরিচয় দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কহিনুর চ্যানেলকে অভিনন্দন জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, লৈঙ্গিক পরিচয় বিবেচনায় না এনে তারা সত্যিকার মানবতার পরিচয় দিয়েছে।

এস/