ট্রাম্পের শুল্ক নীতি চীনের অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত চীনের অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এই শুল্ক নীতি চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মান আরও কমিয়ে দিতে পারে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা ব্যাহত করবে।

ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেই ঘোষণা দিয়েছেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। যদিও আলোচনা চালানোর সুযোগ এখনও খোলা রেখেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক কার্যকর হলে ইউয়ানের মান আরও দুর্বল হতে পারে, যা চীনের ভঙ্গুর অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে চীন অভ্যন্তরীণ ভোগব্যয়ের মন্দা ও রিয়েল এস্টেট খাতে ঋণের সংকট মোকাবিলা করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালে ইউয়ানের মান দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম হতে পারে। মুডি’স অ্যানালিটিকস-এর অর্থনীতিবিদ হ্যারি মারফি ক্রুজ বলেছেন, ‘নতুন শুল্ক, শিথিল মুদ্রানীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ধীর সুদহার কমানোর প্রবণতা ইউয়ানকে দুর্বল করবে।’

তবে দুর্বল ইউয়ান রপ্তানিকারকদের জন্য কিছুটা সুবিধা এনে দেবে, কারণ এর ফলে বিদেশে চীনা পণ্যের দাম কমবে।

একদিকে ইউয়ানের মান কমলে চীনের রপ্তানি বাড়তে পারে, অন্যদিকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও খারাপ করতে পারে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, ইউয়ানের দ্রুত পতন হলে ২০১৫ সালের মতো পুঁজির বহির্গমন ঘটতে পারে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একটি শক্তিশালী মুদ্রার পক্ষে থাকলেও, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইউয়ানের মান ধরে রাখাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানের মান স্থিতিশীল রাখতে বিদেশি মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ করবে। তবে বেশি পতন ঠেকাতে এটি সীমিত মাত্রায় হবে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ২০২৫ সালের শেষে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মান ৭.৪৫-এ নেমে যেতে পারে।

এছাড়া, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হংকংয়ে ৬০ বিলিয়ন ইউয়ানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিল জারি এবং বাজারে বড় আকারে তহবিল সরবরাহ করছে। যদিও এই পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে তারল্য বাড়ানোর প্রচেষ্টার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সরকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু মার্কিন শুল্ক নীতির কারণে ভোক্তাদের আস্থা ফিরে আসা কঠিন হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের জন্য সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনা সামাল দেওয়া একইসঙ্গে বজায় রাখা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।