ডাকসু নির্বাচনে আর প্রার্থী হবেন না ভিপি নূর

প্রায় তিন দশক পর গত বছরের ১১ মার্চ নির্বাচনের মাধমে নতুন নেতৃত্ব পায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। নির্বাচনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে নুরুল হক নূর ভিপি ও আখতার হোসেন সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদ পায়। এছাড়া ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যে প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএস ও বিশ্ববিদ্যাল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এজিএস পদে জয় পেয়ে এক বছর মেয়াদী কমিটি গঠন হয়।

ডাকসুর এই কমিটির মেয়াদ আছে আর মাত্র ৫ সপ্তাহ। এর পরই নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারো নতুন নেতৃত্ব পাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তবে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না সংসদের বর্তমান সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। নূর বলেন, আমি ডাকসুতে নতুন নেতৃত্ব দেখতে চাই। আমি চাই নতুন কেউ এই পদে আসুক। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে ছাত্রসংসদের সবচেয়ে বড় পদে আমি নির্বাচন করে জয়ী হয়েছি। তাই আবার একই পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আমার নেই। নানা প্রতিকূলতা সত্ব্বেও ছাত্ররা ভোট দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি ভিপি হওয়ার আগেও সাধারণ ছাত্রদের দাবির প্রতি সোচ্ছার ছিলাম, ভিপি হওয়ার পরও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।

নিয়মানুযায়ী তার আবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের নিয়মিত মাস্টার্সের এই ছাত্রের বয়স মাত্র ২৫ বছর।

এদিকে, মেয়াদ শেষ হলেই নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা। তবে এবার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনে। ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যেও তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

গত নির্বাচনে ভিপি নুর ১৯৩৩ ভোটের ব্যবধানে হারান তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনকে, পরে যিনি ছাত্রলীগ থেকে পদচ্যুত হন। ভিপি পদে নুরুল হক পান ১১ হাজার ৬২ ভোট। ছাত্রলীগের ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক শোভন পান ৯ হাজার ১২৯ ভোট। ওই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। ভোট পড়ে ২৫ হাজারের কিছু বেশি।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্যানেল সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে ভিপি পদে জয়ী হয়েছিলেন ভিপি নুর। এবারও এই প্যানেল নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানান তিনি।

এবার কে ভিপি পদে নির্বাচন করবে-এমন প্রশ্নে নুর বলেন, এখনও এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণে অনেক কার্যকর নেতৃত্ব আছে, তাদের মধ্য থেকেই একজন ভিপি পদে নির্বাচন করবেন।

সে ক্ষেত্রে কে এগিয়ে আছেন-এমন প্রশ্নে ভিপি নুর বলেন, আমাদের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন আছেন, তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচন করবেন। রাশেদ, ফারুকসহ আরও অনেকে আছেন তাদের মধ্য থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নেতৃত্ব বেছে নেবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয়ী হয় ছাত্রলীগ। জিএস-এজিএসসহ ২৩ পদে জয়ী হয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পান ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাশেদ খান পান ৬ হাজার ৬৩ ভোট। এজিএস পদে ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন পান ১৫ হাজার ৩০১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ফারুক হোসেন পান ৫ হাজার ৮৯৬ ভোট।

আজকের বাজার/এমএইচ