ডা.মিলন-নূর হোসেন হত্যার বিচার করবেন এরশাদ!

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে দুই আলোচিত রাজনৈতিক কর্মী ডা. মিলন এবং নূর হোসেন হত্যার ঘটনায় দায় অস্বীকার করেছেন সাবেক সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সেই সঙ্গে ক্ষমতায় যেতে পারলে এই দুই হত্যার বিচারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

প্রায় তিন দশক আগে মিলন হত্যার নয় দিনের মাথায় গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া এরশাদ দলের ৩২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠনে এই ঘোষণা দেন। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই অনুষ্ঠান হয়।

আমার হাতে রক্তের দাগ নেই, এমন দাবি করে এরশাদ বলেন, ‘প্রতিবছরই ২৭ নভেম্বর ডা. মিলন দিবস পালন করা হয়। কিন্তু এর বিচার কেন হলো না? আমরা ক্ষমতায় গেলে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করব।’

অনুষ্ঠানে ১৯৮২ সালে সেনা প্রধান থাকাকালে ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন এরশাদ। দাবি করেন, তিনি হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন চালাননি, বরং ক্ষমতা ছাড়ার পর স্বজনসহ তিনি এবং দলের নেতা-কর্মীরাই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

প্রায় নয় বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা এরশাদকে হটাতে আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে আগাচ্ছিল তখন ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন যুগ্ম-মহাসচিব ডা. শামসুল আলম খান মিলন। আর এই ঘটনা আগুনে ঘি ঢালে এবং নয় দিনের মাথায় ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হন এরশাদ।

গত ২৭ বছর ধরেই মিলন হত্যা দিবস পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্তু এই হত্যার বিচার শেষ করা যায়নি। এ জন্য মিলনের স্বজনরা প্রায় প্রতি বছরই তাদের হতাশার কথা বলেন।

মিলন হত্যার পাশাপাশি যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন হত্যার দায়ও অস্বীকার করেন এরশাদ। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বুকে ও পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান লিখে বের হয়েছিলেন নূর হোসেন। তিনও গুলিতে নিহত হন।

এরশাদ বলেন, ‘একই মাসে (নভেম্বর) মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো নূর হোসেনের হত্যার দায় আমার না। নূর হোসেনকে কারা মেরেছে আমরা জানি না। তবে ক্ষমতায় গেলে এ বিষয়টাও খতিয়ে দেখা হবে।’

আজকের বাজার : এলকে/ ১ জানুয়ারি ২০১৮