২৪৪০ রোহিঙ্গা ডিপথেরিয়া আক্রান্ত 

গত ৮ নভেম্বর ও ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২ হাজার ৪৪০ জন সম্ভাব্য ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এখনো পর্যন্ত এ ছোঁয়াচে রোগে মারা গেছে ২৬ জন।

বাসস্থান সনাক্ত করতে সমস্যা হওয়ায় ২ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে ১৫০৯ জন রোগীর কেস পেশেন্ট হিসেবে এ গণনায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। যার ফলে এ ফলাফলকে আনুমানিক ধরা হচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার এ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে রিলিফওয়েব নামের ওয়েবসাইটে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ডিপথেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ ০ থেকে ৫ বছরের বয়সী। আর আক্রান্তদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। ২ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৮শতাংশই নারী। আর পুরুষদের মধ্যে আক্রান্ত ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

গত রোববার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালিতে মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছিলেন, উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত ৬৯ হাজার রোহিঙ্গাকে ডিপথেরিয়া টিকার আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, শুধু ডিপথেরিয়া নয়, যতদিন রোহিঙ্গা থাকবে ততদিন রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাবে সরকার।

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গত ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে দমন নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গারা বহু দশক মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এর ফলে তারা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত।

টিকাদানের মাধ্যমে কয়েক দশক আগে ভয়ংকর এই রোগ বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে তা দেশে আবারও হানা দিয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রোগীদের এক তৃতীয়াংশ ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী আর এক পঞ্চমাংশ ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে। অর্থাৎ সম্ভাব্য ডিপথেরিয়া আক্রান্তদের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের মধ্যে।

সংক্রামক ব্যাধি ডিপথেরিয়ায় আক্রান্তের হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্তের গলার ভেতরে দিকে সরু পর্দা তৈরি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা, পক্ষাঘাত এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।

গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, এত ব্যাপক পরিমাণে ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার পেছনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসাকে মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। যারা একই ঘরের মধ্যে ঘুমান অথবা রোগীর হাঁচি কাশির মধ্যে নিয়মিত বা দীর্ঘসময় ধরে থাকেন তাদের মধ্যে ডিপথেরিয়ার জীবানু প্রবেশ করে। উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে স্কুলের সতীর্থ, মেডিকেল ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগি ও মেডিকেল কর্মী।

এ অনুমানগুলো ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বরের জনসংখ্যা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

আজকের বাজার : এলকে ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭