ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন খ্রিষ্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্ম গুরু পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর বেলা ৩টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
বিমানবন্দরে রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মগুরুকে অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এসময় ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় তাকে। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ৩১ বছরে কোনো পোপের এটাই হবে প্রথম বাংলাদেশ সফর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশে ভ্যাটিক্যান দূতাবাস পোপের সফরের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। তাকে স্বাগত জানাতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক সাজ-সজ্জা ও প্রস্তুতি।
পোপের ঢাকা সফর:
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন পোপ ফ্রান্সিস। এরপর ধানমন্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন পোপ। সেখান থেকে যাবেন বঙ্গভবনে। রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন তিনি। সন্ধ্যায় বঙ্গভবনেই মন্ত্রী, বিশিষ্ট নাগরিক, সুশীল সমাজ, কূটনৈতিকদের সঙ্গে পোপ সাক্ষাৎ করবেন এবং বক্তব্য রাখবেন।
পোপ ফ্রান্সিসের সফরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব হল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রার্থনা সভা। আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনা ও যাজকদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ভাষণ দেবেন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে ৮০ হাজার পুণ্যার্থী যোগ দেবেন। বাঁশ, কাঠ আর ছনের তৈরি ৮০ ফুট বাই ৫০ ফুটের কুঁড়েঘরের আদলে নির্মিত মঞ্চে বসে পোপ ভক্তদের নিয়ে প্রার্থনা করবেন। তিনি প্রার্থনায় শান্তি ও সম্প্রীতির ওপর জোর দেবেন।
বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে ঢাকায় ভ্যাটিকান দূতাবাসে যাবেন তিনি। সেখানে পোপের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ করবেন। বিকাল ৪টায় কাকরাইলে রমনা ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন করবেন তিনি। এরপর প্রবীণ যাজক ভবনে বাংলাদেশের বিশপদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করবেন এবং বক্তব্য রাখবেন। বিকাল ৫টায় কাকরাইলের আর্চ বিপশ হাউজের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমাণ্ডলিক সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন পোপ।
শনিবার সকাল ১০টায় তেজগাঁও মাদার তেরেজা ভবন পরিদর্শন করবেন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে তেজগাঁও গির্জার যাজক, ব্রাদার-সিস্টার, সেমিনারিয়ান ও নবিশদের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এরপর তেজগাঁও সমাধিস্থল ও পুরনো গির্জা পরিদর্শন করবেন। বিকাল তিনটায় রাজধানীর নটর ডেম কলেজে যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। এদিনই বিকাল ৫টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থেকে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন পোপ ফ্রান্সিস। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন।
এ ছাড়া সফরকালে পোপ রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনির প্রেসিডেন্ট কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি. রোজারিও বলেন, পোপের এ সফর অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তখন রোহিঙ্গা ইস্যুটি ছিল না। রোহিঙ্গা ইস্যু পরে সৃষ্টি হয়েছে, যা এখন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
আজকের বাজার: আরআর/ ৩০ নভেম্বর ২০১৭