ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগাম অবসর চাইলেন সামিয়া রহমান

শিক্ষকতার বয়স শেষ হওয়ার আগেই অবসর চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিয়া রহমান। কয়েক সপ্তাহ আগে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের কাছে আর্লি রিটায়ারমেন্টের (সময় শেষ হওয়ার আগে অবসর) জন্য এ আবেদন করেন তিনি।

সোমবার অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর ও সামিয়া রহমান ডেইলি বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সামিয়া বলেন, আমার ছেলে অসুস্থ। এ অবস্থায় আমি তাকে ফেলে চাকরিতে যোগ দিতে পারছি না। তাই আর্লি রিটায়ারমেন্ট চেয়েছি।

জানা গেছে, চার মাসের আর্ন লিভ নেন সামিয়া রহমান। সেই ছুটিতে তিনি আমেরিকায় যান ছেলের কাছে। ছুটি শেষের দিকে চলে এলে ছেলের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিভাগ থেকে বিনা বেতনে এক বছরের ছুটি চান সামিয়া রহমান। তবে তার ছুটি মঞ্জুর করেনি কর্তৃপক্ষ। এর পরই তিনি অবসরের আবেদন করেন। এখনো তিনি আমেরিকাতেই আছেন।

সামিয়া রহমান বলেন, আমার বড় ছেলে খুব অসুস্থ। আমি যদি এখন দেশে এসে চাকরিতে যোগদান করি, আর আমার ছেলের কিছু হয় তাহলে সর্বস্ব হারিয়ে ফেলবো। তার যত্ন নেয়া দরকার, এ জন্যে আমি এক বছরের বিনা বেতন ছুটি চেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। উপাচার্য এ ছুটি দেননি। চাকরির জন্য আমি ছেলেকে হারাতে চাই না। এজন্য চাকরি থেকে আর্লি রিটায়ারমেন্ট চাই। এটা আমার অধিকার। এটা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর না করলে আমি হাইকোর্টে যাবো।

অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, সামিয়া রহমান চাকরির বয়স শেষ হওয়ার একটু আগেই অবসরে যেতে চান। তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন। তার আবেদনের কপি বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দফতরে পাঠানো হয়েছে। এখন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সিন্ডিকেট কী সিদ্ধান্ত নেয় তার ওপর। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির বয়স ৬৫ বছর। সেই হিসেবে উনার চাকরির মেয়াদ ২০৩৮ সালে শেষ হওয়ার কথা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা যায়, সামিয়া রহমান চার মাসের আর্ন লিভ নিয়ে দেশের বাইরে যান। এখনো তিনি দেশের বাইরে আছেন। গত ৩১ মার্চ তার এ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মার্চের শুরুতেই তিনি বিনা বেতনে আরও এক বছরের ছুটির জন্য আবেদন করেন। তবে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঞ্জুর না করলে মার্চের শেষের দিকে তিনি আর্লি রিটায়ারমেন্টের জন্য আবেদন করেন।

ছুটি মঞ্জুর না করার বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনসুর আহাম্মদ বলেন, উনি তিন মাসের আর্ন লিভ নিয়ে বিদেশ গেছেন। এরপর হঠাৎ করে বললেন- এক বছরের বিনা বেতনের ছুটি প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ম নেই। তাই এটি মঞ্জুর হয়নি।

রেজিস্ট্রার দফতরের প্রশাসন-১ সূত্রে জানা গেছে, বিভাগ থেকে পাঠানো সামিয়া রহমানের আর্লি রিটায়ারমেন্টের কপির একটি নোট উপচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন উপাচার্যের সিদ্ধান্তের ওপর এটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নোট আসুক। তারপর দেখে বলা যাবে।

উল্লেখ্য, টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে পরিচিত সামিয়া রহমান ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। পরে এক অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে। খবর-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান