ঢাবির ৫২তম সমাবর্তন ৯ ডিসেম্বর

দেশসেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর। তবে এর আগেই সমাবর্তনের রঙে রঙিন হতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বড় আয়োজনের জন্য বানানো হচ্ছে সমাবর্তনের মূল মঞ্চ।

এবারের সমাবর্তনে অংশ নিতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রায় ২০ হাজার গ্রাজুয়েট। ঢাবির ইতিহাসে এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি গ্রাজুয়েট অংশ নিচ্ছেন সমাবর্তনে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এবার বড় পরিসরে সমাবর্তন আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঢাকার সরকারি সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ায় স্নাতকদের সংখ্যা বেড়েছে। পরেরবার এই সংখ্যা আরো বাড়বে। আয়োজনও হবে বড়।

৫২তম সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলোতে শুরু হয়েছে চাপা উচ্ছ্বাস। শিক্ষার্থীরা এরইমধ্যে ৯ তারিখের মহড়া দিতে শুরু করেছে। গাউনের নিচে পড়ার জন্য সুট-বুট কেনার পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য দামি ক্যামেরাও কিনছেন অনেকে। অনেকে আবার বাবা-মাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন।

সমাবর্তনে অংশ নিতে যাওয়া সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী জাভেদ হায়দার বলেন, শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হলো সমাবর্তন। এদিনকে ঘিরে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। সেদিন বাবা-মাকে নিয়ে আসবো ঢাকায়। তাদের মাথায় সমাবর্তনের ক্যাপ পরিয়ে দেয়ার স্বপ্ন ছিল, সে স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।

রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী রাশেদা নাওয়ার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যত বন্ধু ছিল তাদের সবার সঙ্গে ছবি তুলবো। ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় একটি করে ছবি তুলবো। সমাবর্তন মানেই জীবনের একটি অধ্যায় পূর্ণ হওয়া। এই অধ্যায়ের সব স্মৃতি সুন্দরভাবে টুকে রাখতে হবে।

মুহসিন হলের প্রাধ্যক্ষ নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে হল প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের এই স্মৃতিকে রঙিন করে দিতে কোনো কার্পণ্য নেই আমাদের।

এদিকে সমাবর্তন উপলক্ষ্যে সোমবার এক সমন্বয় সভা উপাচার্য অফিস সংলগ্ন প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, সমাবর্তনের নির্বাহী কমিটি, ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ২৬টি উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য-সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সমাবর্তন উপলক্ষ্যে গঠিত সব কমিটির কার্যক্রমের অগ্রগতি ও প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সার্বিক অগ্রগতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সন্তোষ প্রকাশ করেন। সমাবর্তন বর্ণাঢ্যভাবে আয়োজনের ক্ষেত্রে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার জন্য উপাচার্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবর্তনের নিরাপত্তা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেশি-বিদেশি অনেক অতিথিও যোগ দেবেন সমাবর্তনে। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

প্রক্টর বলেন, সমাবর্তন ভালো ভাবে আয়োজনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় উৎসবটি সফল করতে নিরাপত্তায় সামান্যতম ছাড়ও দেবে না প্রশাসন।

৫২তম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট ফর কসমিক রে রিসার্চ-এর পরিচালক এবং নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. তাকাকি কাজিতা সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ ডিগ্রি প্রদান করা হবে।

আজকের বাজার/এমএইচ