তাদের বুকে সনদ, হাতে ঝাড়ু

বুকে সনদ ঝুঁলিয়ে ও হাতে ঝাড়ু নিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে হাজারো চাকরি প্রত্যাশীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ‘কোটা সংস্কার চাই’ কর্মসূচি সফল করতে রাজপথে নেমেছে।

আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ঝাড়ু হাতে ও গলায় সনদ ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত ঝাড়ু হাতে রাস্তা পরিষ্কার করে শিক্ষার্থীরা।

সরকারি চাকরিতে চলমান কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে আন্দোলন। জনপ্রশাসনে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর থেকেই মেধার চেয়ে কোটাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে আসছেন।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ (পিএসসি) সরকারের বিভিন্ন কমিটি ও কমিশন একাধিকবার এই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশও করেছে। আগামি ২৯ মার্চ শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে নাগরিক সমাবেশ। এতে দেশের বিশিষ্টজনরা কোটা সংস্কারের পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরবেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান ৫৬ শতাংশ কোটা থাকায় সাধারণ ও মেধাবি চাকরিপ্রত্যাশীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এরপরও বিভিন্ন সময় কোটায় বিশেষ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলনের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক জনসভায় কোটা ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোটা ব্যবস্থা রাখতেই হবে কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তিনি বলেন, আমরা দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাদের বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এ কথা ভুললে চলবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই তাদের প্রতি সম্মান দিতেই হবে আমাদের। তাদের ছেলেমেয়ে, নাতি, পুতি পর্যন্ত যেন চাকরি পায়, তার জন্য কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর যদি কোটায় না পায়, তা হলে ইউনিভার্সিটির যারা মেধাবী ছাত্রছাত্রী তাদের দেওয়া যাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের এ বিশেষ ব্যবস্থা করতেই হবে।

তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, তারা কোটা প্রথা বাতিল নয়, এর যৌক্তিক সংস্কার চায়। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, সংস্কার আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা কারো উসকানিতে পা দিয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাব না। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আন্দোলন পরিচালিত হবে।

আল/এস