তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির আহবান

আজকের বাজার প্রতিবেদক: তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধি করলে,তামাকের ব্যবহার কমে আসবে বলে ধারনা বিশিষ্টজনদের।

বোববার, ২৩ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ- ”জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধিতে করণীয়” বিষয়ক এক সেমিনারের বক্তারা এ কথা বলেন। এ সময় তারা এ বিষয়ে নানা পরামর্শ তুলে ধরেন।

তারা বলেন, অর্থনীতির সাধারণ নিয়মে কোন পণ্যের দাম বাড়লে, তার ব্যবহার কমে আসে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রনে,এর কর ও মূল্যবৃদ্ধিকে অতি গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে, তামাকের মত বহুমাত্রিক ক্ষতিকর পণ্যের ক্ষেত্রে, অর্থনীতির এ নিয়ম প্রমানিত। নরওয়ে,কানাডা,দক্ষিণ আফ্রিকা,থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশে কর বৃদ্ধির ফলে তামাকের ব্যবহার অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

তামাকের ওপর উচ্চহারে কর আরোপ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর; বিশেষত কিশোর-তরুণদের ধূমপানসহ তামাকের নেশা নিরুৎসাহিত করে। উন্নত দেশে তামাকের ওপর কর আরোপের ফলে, যদি ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধি পায় তবে তামাকের ব্যবহার ৪ ভাগ কমে যায়। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে দ্বিগুন অর্থাৎ ৮ ভাগ কমে আসে। গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে, তামাকের কর বৃদ্ধি তামাক নিয়ন্ত্রণে বিনা খরচে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকায়, তামাকের ওপর কর বৃদ্ধির ফলে, তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমেছে অনেক। তামাক ব্যবহার কমানো ও তামাকসেবীদের তামাক বর্জনে উৎসাহিত করতে, কর বৃদ্ধির মাধ্যমে খুচরা মুল্য বৃদ্ধি সবচাইতে কার্যকর পন্থা বলে দাবি বিশিষ্টজনদের।

এ সময় বিশেষজ্ঞরা তামাকের কর বৃদ্ধি করা হলে,এর ব্যবহার কি হারে কমে আসবে তার একটি নমুনা তুলে ধরেন।
-যারা তামাক সেবন করছে, তারা সেবনের পরিমান কমায় (যেমন যারা দিনে ১০টি স্টিক সেবন করে,দাম বৃদ্ধির ফলে. তাদের অনেকে পরিমান কমিয়ে আনে)
-যারা তামাক বর্জন করেছে, তাদের পুনরায় শুরু করার প্রবণতা অনেকাংশে দূর হয়ে যায়।
-কিশোর-তরুণদের যারা এখনো ধূমপান শুরু করেনি, তাদের অধিকাংশের মধ্যে নেশায় ধাবিত হওয়য়ার প্রবনতা কমে যায়।
-তামাক সেবনকারীর সংখ্যা কমে আসে অনায়াসে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১০ এ বলা হয়েছে,তামাকের উপর ৫০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হলে, ২২টি উন্নয়নশীল দেশে ১৪০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার (১০,৮৫০ কোটি টাকা) অতিরিক্ত পাওয়া যাবে। যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে বরাদ্দ হলে, এ খাতে সরকারী ব্যয় ৫০% বাড়ানো সম্ভব। ধুমপান ও তামাকের মত ক্ষতিকর নেশা থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে বিড়ি-সিগারেট,সাদাপাতা,জর্দা,গুল,খৈনী এসবের দাম ও কর বৃদ্ধির গুরুত্বারোপ করেন বিশিষ্টজনেরা।

আজকের বাজার:এসএ/এলকে/২৩এপ্রিল,২০১৭