রাজধানীর বাড্ডায় তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে বেসরকারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় বাসের চালক ও হেলপারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন বাসের চালক রোমান, কন্টাক্টর মনির ও হেলপার নয়ন। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় গতকালই মামলা নেয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছিল। প্রথমে ধর্ষণচেষ্টার বাসটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখে শনাক্ত করা হয়। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীর সহযোগিতায় ঘটনায় জড়িত বাসের চালক রোমান, কন্টাক্টর মনির ও হেলপার নয়নকে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাসটি জব্দ করা হয়। আসামিরা এখন গুলশান থানায় বন্দী আছে। দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ জানান, মামলাটি আদালতে শুনানি শুরু হলে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রী কর্তৃক তুরাগের বাসগুলোর চাবি মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে পুলিশের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে। দাবি অনুযায়ী জড়িতরা গ্রেফতার হওয়ায় আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী গত শনিবার দুপুরে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে আসার জন্য বাড্ডা এলাকা থেকে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে যাত্রী ছিল মাত্র ৭ থেকে ৮ জন। এই সময় নাটকীয়ভাবে পরবর্তী স্টপেজগুলোতে বাস সামনে যাবে না বলে যাত্রীদেরকে নামাতে থাকে এবং নতুন কোনো যাত্রী ওঠানো বন্ধ রাখে। ওই ছাত্রী আশঙ্কা ও সন্দেহবশত বাস থেকে নামার চেষ্টা করলে বাসের হেলপার দরজা বন্ধ করে দেয়। কনট্রাক্টর তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। বাসের কন্টাক্টর হেলপারের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর অন্য বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে কর্তৃপক্ষ ও সহপাঠীদের বিষয়টি জানান।
পরবর্তীতে সহপাঠীরা ওই বাসটি আটক ও হেলপার-কনট্রাক্টরকে আটকের দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন করে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা তুরাগ পরিবহনের অর্ধশত বাস আটকে চাবি নিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর স্বামী জহুরুল ইসলাম ওই ঘটনায় গত রোববার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ১০/৩০ ধারায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তুরাগ পরিবহনের ওই বাসের অজ্ঞাত চালক, হেলপারসহ তিনজনকে আসামি করা হয়।
আজকের বাজার/একেএ