মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যে বর্মি সেনাদের বর্বরতা থেকে বাঁচতে এবার তেলের খালি কনটেইনারে করে নাফ নদী পাড়ি দিচ্ছে রোহিঙ্গারা।
১১ অক্টোবর বুধবার দুপুরে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপসংলগ্ন জেটি ঘাটের অদূরে নাফ নদী সাঁতারে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশকালে ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা।
গত বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশি ট্রলারে করে রোহিঙ্গাদের পরিবহনে কড়াকড়ি আরোপ করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে কয়েকজন মাঝিকে এ জন্য আটক করে শাস্তি দেয়া হয়। ফলে অনেক রোহিঙ্গা নিজেদের বাঁচাতে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়, কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে নানা উপায়ে নদী ও সাগর পাড়ি দেয়। এখন মিয়ানমার ছেড়ে আসা বেশির ভাগ রোহিঙ্গা নিজেদের ট্রলারে করে বাংলাদেশে আসছে।
বুধবার নাফ নদী থেকে ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপ স্টেশন কমান্ডার লে. জাফর ইমাম সজীব। তিনি বলেন, জেটি ঘাটের দুই কিলোমিটার পূর্বে নাফ নদী সাঁতরে কিছু লোক বাংলাদেশের জলসীমানায় অনুপ্রবেশ করতে দেখে কোস্টগার্ডের টহল দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় নাফ নদীতে ভাসমান অবস্থায় তেলের খালি কনটেইনারসহ ১১ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্য পাঁচজন নাফ নদী পাড়ি দিয়ে শাহপরীর দ্বীপের কাছাকাছি পৌঁছলেও অপর ছয়জন দূরে তেলের কনটেইনার ধরে ভাসছি। তাদের উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
উদ্ধার হওয়া ফয়েজ উল্লাহ ও ইমাম হোসেন জানান, মায়ানমার সেনাবাহিনী তাদের গ্রাম এক মাসের বেশি সময় ধরে অবরোধ করে রেখেছে। গ্রামের লোকজনকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। ফলে গ্রামের লোকজনকে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এমনকি না খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। তাই তারা প্রাণে বাঁচতে নাদী পাড়ি দেন।
নদী থেকে উদ্ধার ১১ জন মায়ানমারের বুশিদং (বুথিদং) এলাকার বলিপাড়া, পুমালি, টাইম্ম্যাখালীসহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা বলে জানান তারা।
গত ২৫ আগস্ট মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো দলে দলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১১ অক্টোবর ২০১৭