আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর ২ বছরে সর্বোচ্চ উঠেছে। বিবিসি, ইকোনমিক টাইমসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার ও ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বাজারে অপেক্ষাকৃত উন্নত মানের অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দর ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৬০ ডলারে উঠে।
খবরে বলা হয়, তুরস্ক ও ইরাকের মধ্যে উত্তেজনা এবং এশিয়ায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে এই প্রভাব পড়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যারেলপ্রতি এ শ্রেণির তেল ৫৯.০২ ডলারে কেনাবেচা হয়। ২০১৫ সালের জুলাই এর পর যা সর্বোচ্চ।
এসময় ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস শ্রেণির তেল বিক্রি হয় ব্যারেলপ্রতি ৫২.২২ ডলার।
সোমবার তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেসেপ তায়েফ এরদোগান ইরাকের কুর্দিস্থান অঞ্চলে তেলের প্রবাহ কমিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। ওই অঞ্চলের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের ওপর চাপ প্রয়েোগের চেষ্টা হিসেবেই এ হুমকি দেওয়া হয়। এসময় ইরাক থেকে আসা হাজার হাজার ব্যারেল তেলের পাইপলাইনও বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন তিনি।
মাইক ভ্যান নামের একজন বাজার বিশ্লেষক বলেন, তেলের সরবরাহ সংকট ও চীনের চাহিদার বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সোমবার গত ২৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হয়েছে অপরিশোধিত (ব্রেন্ট ক্রুড) তেল।
এফএক্সটিএম নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বাজার কৌশলবিদ হুসেইন সাইদ বলেন, ইরাকের কুর্দিস্থান অঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদিত হয়। যার ৮৫ ভাগই তুর্কি পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ হয়।
তুর্কিরা যদি তেলের প্রবাহ কমিয়ে দেয়, তাতে বাজারে দাম আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। তবে তিনি বলেন, ব্রেন্ট ক্রুড আর ইউএস টেক্সাস ক্রুডের মধ্যে যে ব্যবধান তা কমিয়ে আনতে হবে। ওপেককেই এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, তেলের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য না থাকার কারণে ২০১৪ সালের জুন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে থাকে তেলের দর। তারপরও বৃদ্ধি পেতে থাকে দর। ব্যারেলপ্রতি ১১০ থেকে একসময় তা ৩০ ডলারের নিচে চলে আসে। এ প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন- ওপেক কয়েকদফা বৈঠকে বসলেও তেলের সরবরাহ শিথিল করা সম্ভব হয়নি।
তবে কিছু দেশ এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে থাকে বাজার। কিন্তু দর ৫০ ডলারের গণ্ডি পার হচ্ছিল না।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭