তৈরী পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মালিক-শ্রমিক উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, তৈরী পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মালিক শ্রমিক উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অতিসম্প্রতি আমাদের তৈরী পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি বেশ ভাল। এ ধারাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
টিপু মুনশি আজ রাজধানীর মহাখালিস্থ ব্র্যাক সেন্টারে ‘রিসেন্ট আরএমজি গ্রোথ: হোয়াট লেসনস উই লার্নড এবাউট ডিসেন্ট এমপ্লয়েমেন্ট?’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
‘তৈরী পোশাক খাতের অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে’ উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোন কোন ক্ষেত্রে হয়তো আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এজন্য আরও কাজ করার সুযোগ আছে। তাই একে অপরের প্রতি দোষারোপ না করে আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে তৈরী পোশাক খাতের সকল ক্ষেত্রে পরিস্থিতির আরও উন্নতির তাগাদা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কারখানায় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় দর-কষাকষির জন্য ট্রেড ইউনিয়ন থাকা দরকার। আমরাও সেটা চাই। তবে এ সকল ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের শিক্ষিত হতে হবে। তাদের শ্রমিক ও মালিকের স্বার্থ বুঝতে হবে। প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে হবে, প্রতিষ্ঠানের প্রতি দরদ থাকতে হবে। জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ, সুযোগ-সুবিধা দেখার দায়িত্বও কারখানার মালিকের। উভয়ে মিলেমিশে কাজ করলে শোভন বা ডিসেন্ট কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং আমাদের তৈরী পোশাক শিল্প অনেক এগিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতকে অনেক প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, গ্রীণ ফ্যাক্টরি গড়ে তুলতে বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে। ফ্যাক্টরিগুলোকে কর্মবান্ধব করে তুলতে ব্যয়ও বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় তৈরী পোশাকের বিক্রয় মূল্য বাড়ছে না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে মূল্য কমছে। সে বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার ফ্যাক্টরির মালিক এবং শ্রমিকদের ভাল চায় বলেই প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এজন্য এ শিল্পের প্রতি কর্মীদের আস্থারও উন্নতি হয়েছে। উভয় পক্ষ মিলে এ খাতের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সরকারের কাছে তুলে ধরলে, এগুলো সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে মূল বিষয়ের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র রিসার্স ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
সিপিডি’র চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরী, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের প্রেসিডেন্ট এডভোকেট মন্টু ঘোষ, বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহিদুল্লাহ আজিম, বিকেএমইএ’র নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কারস সলিডারেটি’র নির্বাহী পরিচালক মিসেস কল্পনা আক্তার, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভ. এন্ড ডেভেলপমেন্ট’র সিনিয়র ফেলো মিসেস মাহিন সুলতান ও ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মিসেস নুজহাত জাবিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।