জেলায় টানা কয়েক দিন ধরে কমছে রাতের তাপমাত্রা। বইছে হিমেল বাতাস, দুপুর পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের । হিমেল বাতাসের কারণে এ জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে চলছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ৯৮ শতাংশ এবং বাতাসের গতি বেগ ঘন্টায় ৩ কিলোমিটার প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ৫ দিন ধরে দিনের বেলা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৭ ডিগ্রি কমে এসেছে। গত ২১ জানুয়ারি এই জেলায় দিনের বেলা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২২ জানুয়ারি থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ থাকছে।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আরো বলেন, উত্তরের জনপদ দিনাজপুর অঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে দিনের বেলা সূর্যের আলোর প্রভাব পড়ছে না। ঘন কুয়াশায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা থাকছে। ফলে হিমেল বাতাস ও কনকনে ঠাণ্ডা প্রবাহিত হচ্ছে। এই অবস্থা আরো কয়েক দিন থাকবে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে সকালে ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার সাথে বইছে তীব্র হিমেল বাতাস। আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে সাধারণ মানুষ কিছুটা কাহিল হয়ে পড়েছে।
শীতের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। তবে শ্রমজীবিরা পরিবারের চাহিদা মেটাতে শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে ছুটছেন।
অপরদিকে তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাট বাজার গুলো। দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছেনা কনকনে ঠাণ্ডা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। কাজে যাচ্ছেন না অনেকে। ভোরে কুয়াশা থাকার কারণে বিভিন্ন সড়ক গুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন গুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস আজ সকালে জানান, দিনাজপুর সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলার ১৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। বিশেষ করে ঠাণ্ডা জনিত সদির্, কাশি, জ্বর শিশুদের নিউমোনিয়া এবং বয়স্করা শীতজনিত ব্যথা ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়াবেটিক ও কিডনিজনিত আক্রান্ত রোগীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শীতজনিত রোগ মোকাবিলায় হাসপাতাল গুলোতে সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঔষধ সেবন ও শীতের প্রকোপ থেকে হেফাজতে রাখতে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জেলার ১৩টি উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার কম্বল, ১২ হাজার সোয়েটার, জ্যাকেট ও ১২ হাজার পিস শিশু পোশাক বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের আহ্বানে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং ব্যবসায়ী ও বিত্তবানেরা প্রতিদিন শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।