দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের উত্তেজনাকর ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-২ গোলে পরাজিত করেছে পিএসজি। এই পরাজয়ে পেপ গার্দিওলার সিটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছে।
পার্ক ডি প্রিন্সেসে ম্যাচের সব গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে। জ্যাক গ্রীলিশ ও আর্লিং হালান্ডের গোলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ২-০ গোলের লিড পায় সিটিজেনরা। ওসমানে ডেম্বেলে দ্রুত এক গোল শোধ করেন। ৬০ মিনিটে ব্র্যাডলি বারকোলার গোলে পিএসজি সমতায় ফিরে। ৭৮ মিনিটে হুয়াও নেভেস ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের প্রথমবারের মত এগিয়ে দেন। ইনজুরি টাইমে গনসালো রামোসের গোলে পিএজির জয় নিশ্চিত হয়। যদিও দীর্ঘ সময় পরীক্ষার পর ভিএআর গোলটি উপহার দেয় পিএসজিকে।
ম্যাচ শেষে পিএসজি বস লুইস এনরিকে বলেছেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রথম গোলটি। কারন এটাই ম্যাচের আবহ বদলে দিয়েছিল। ঐ মুহূর্ত থেকে আমরা ম্যাচে আধিপত্য দেখানো শুরু করি। আমার দল সবসময়ই আস্থা রেখেছে, কখনই ম্যাচ ছেড়ে দেয়নি।’
বিশ্বের শক্তিশালী এই দুই দলই লিগ পর্বে নড়বড়ে অবস্থান নিয়ে কাল প্যারিসে খেলতে নেমেছিল। এই ম্যাচের আগে আট পয়েন্ট নিয়ে ৩৬ দলের মধ্যে সিটি নক আউট পর্বের সর্বশেষ অবস্থান ২৪তম স্থানে ছিল। অন্যদিকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে ২৬তম স্থানে ছিল পিএসজি। এই জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ২২তম স্থানে উঠে এসেছে প্যারিসের জায়ান্টরা। পিএসজির জন্য এখন প্লে—অফ খেলা অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়।
এই ম্যাচে জিততে পারলে আগামী মাসে প্লে-অফে খেলা সম্ভবত নিশ্চিত হয়ে যেত সিটির। কিন্তু এই পরাজয়ে এখন বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে যাবার শঙ্কা তৈরী হয়েছে। হাতে রয়েছে আর মাত্র এক ম্যাচ।
আগামী বুধবার ক্লাব ব্রাগের বিপক্ষে ঘরের মাঠে জিততে পারলে বেলজিয়ান ক্লাবটিকে টপকে দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত হবে সিটির।
গার্দিওলা বলেন, ‘আজ পিএসজি আমাদের থেকে ভাল খেলেছে। আমাদের এটা মেনে নিতে হবে। ব্রাগের বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচটি আমাদের সামনে শেষ সুযোগ।’
এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ পাঁচ ম্যাচে চার জয় ও এক ড্র নিয়ে নিজেদের অনেকটাই এগিয়ে এনেছে সিটি। অথচ ১৩ ম্যাচে মাত্র এক জয় নিয়ে ২০২৪ সাল শেষ করেছিল গার্দিওলার শিষ্যরা।
প্রথমার্ধ গোলশুন্য থাকার পর বিরতির পর পুরো ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। পিএসজি ডেম্বেলেকে মাঠে নামায়, অন্যদিকে সিটি দুই খেলোয়াড় বদলি করে লেফট উইংয়ে সাভিনহোর জায়গায় গ্রীলিশকে সুযোগ দেয়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তার ফল পায় সিটি। বার্নান্ডো সিলভার শট থেকে গ্রীলিশ সিটিকে এগিয়ে দেন। পুরো স্টেডিয়াম এই গোলে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। ৫৩ মিনিটে গ্রীলিশের কাটব্যাক থেকে হালান্ড মৌসুমের ২৩তম গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। যদিও পিএসজি দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। তিন মিনিট পর বারকোলার সহায়তায় ডেম্বেলে এডারসনকে পরাস্ত করেন। ডিসায়ার ডুয়ের শট বারে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি শটে বারকোলা পিএসজিকে সমতায় ফেরান। ৭৮ মিনিটে ভিটিনহার ফ্রি-কিক থেকে অনেকটাই ফাঁকায় দাঁড়ানো নেভেস বল জালে জড়ান।
ইনজুরি টাইমে বদলী খেলোয়াড় রামোস দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন। (বাসস)