দূতাবাসসমূহে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশন ও দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্যারিস, মুম্বাই, দি হেগ ও কোলকাতায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
এ সময় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হলো মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
একুশের শুরুতে উপ-হাইকমিশন চত্বরে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা অর্ধনমিত করার মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। পতাকা অর্ধনমিত করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এর পর ভাষা শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এর পর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন আয়োজিত প্রভাত ফেরি শুরু হয়। এটি সোহরাওয়ার্দী এভেনিউয়ে ‘বাংলাদেশ গ্রন্থাগার ও তথ্যকেন্দ্র’ থেকে শুরু হয়ে উপ-হাইকমিশন চত্বরে এসে শেষ হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন কলকাতার কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও বুদ্ধিজীবী, বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা, কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিকবৃন্দ, কলকাতার ভাষাপ্রেমী, কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন নাট্য সংগঠনের সভ্যবৃন্দ।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে দিবসের আনুষ্ঠানিক আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ছাড়াও ইউনেস্কোর উপ-মহাপরিচালক (শিক্ষা) স্টিফানি গিয়ানিন, প্যারিসে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্টদূত জোয়ান আন্দ্রে পেরিলো রোদরিগেজ ও অর্গানাইজেশন ইন্টারন্যাশনাল ডি লা ফ্রাঙ্কফোনি এর পরিচালক ইউমা ফল বক্তব্য রাখেন।
ক্যানবেরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মত হাইকমিশন প্রাঙ্গণের বাহিরে অস্থায়ী শহীদ মিনারে “মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”-২০১৯ যথাযথ মর্যাদা এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশের মাধ্যমে পালিত হয়।
ক্যানবেরাস্থ তেলোপিয়া পার্কে মানুকা সার্কিট ও নিউ সাউথ ওয়েলস স্ট্রীটের ক্রসমোড়ে স্থপতি জালাল আনিস কর্তৃক পরিকল্পিত শহীদ মিনার অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। প্রত্যুষ ৬:১০ এ অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনার প্রাঙ্গণেপ্রভাত ফেরী অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন এসিটি গভর্নমেন্ট এর মাল্টিকালচারাল মিনিস্টার মি. ক্রিস্ট স্টিল, বিরোধী দলের নেতা মি. এলিস্টার কো, বাংলাদেশ হাইকমিশনার, ক্যানবেরাস্থ এলিটসহ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসতর প্রবাসী ও অভিবাসীগণ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মাকর্তা-কর্মচারীগণ। অংশগ্রহণকারীরা সমবেত স্থান থেকে পদব্রজে ক্যানবেরাস্থ অ্যাভিনিউর মানুকা অ্যাভাল প্রদক্ষীণ শেষে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে ০১ মিনিট নিরবতা পালন করেন।
মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরের জাউদার পার্কে নেদারল্যান্ডসে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়।
নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত ভারত, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, রাশিয়ান ফেডারেশন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, ইয়েমেন, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং দি হেগের কূটনৈতিক কম্যুনিটি, ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ও নেদারল্যান্ডসে বসবাসরত বাংলাদেশী কম্যুনিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল এবং দি হেগ মিউনিসিপ্যালিটির ডেপুটি মেয়র মিজ সাসকিয়া ব্রুনস শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ১৪ দেশের অংশগ্রহণে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় একুশের এই অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নেপাল, প্যারাগুয়ে, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পীবৃন্দ নাচ গান সহ তাদের ভাষা ও সাস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরে বাংলাদেশের সাথে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।