দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আরও সক্রিয় হতে হবে: বিজিবিকে প্রধানমন্ত্রী

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে শনিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজের দেশ ও জনগণকে ভালোবেসে মানুষের জন্য আপনাদের কাজ করতে হবে।’

বিজিবির ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশ ও জাতির প্রতি সেবার মানসিকতা নিয়ে বিজিবি সদস্যদের যথাযথভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের আহ্বান জানান তিনি।

যেকোনো বাহিনীর জন্য শৃঙ্খলাই সবচেয়ে জরুরি উপাদান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি সর্বদা মনে রাখতে হবে, যেকোনো বাহিনীর জন্য শৃঙ্খলা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সবারই এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, একটি আদর্শ গ্রহণ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে এবং সকলকে সেই আদর্শ বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া সিনিয়রদের আদেশ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এবং জুনিয়রদের প্রতি সহানুভূতি নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি দায়িত্ব পালনে বিজিবি সদস্যদের নির্ভীক হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সবাইকে কাজ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে দেশ আরও উন্নত হয়।’

বিজিবির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদেরকে মনোবল, ভ্রাতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা- বাহিনীর এই প্রধান চারটি নীতি আন্তরিকতা এবং সততার সাথে সম্পাদন করারও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

সীমান্ত সুরক্ষায় আরও সক্রিয় এবং দেশ ও জাতির প্রতি সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে বিজিবির নতুন সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এ সময়, সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ চোরাচালান বন্ধে বিজিবিকে আরও জোরালোভাবে কাজ করার তাগিদ দেন সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিজিবিকে আধুনিকীকরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের ও আধুনিক বাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

‘সেজন্য আমরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ গ্রহণ করেছি,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক শক্তিতে পরিণত করেছি। বিজিবি এখন জল, স্থল ও আকাশে তার দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন করেছে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে আরও ১৫ হাজার বিজিবি সেনা নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আধুনিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে অত্যাধুনিক বিভিন্ন সরঞ্জাম, এটিভি এবং আধুনিক এপিসি, হেলিকপ্টার, যানবাহন স্ক্যানার এবং নতুন বিওপি ও বিএসপি স্থাপনের পাশাপাশি স্পিড বোট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার এবং মারাত্মক এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে সকল স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

দেশের মানুষকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে কোভিড ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য অগ্রিম অর্থ প্রদানসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপেরে কথা উল্লেখ ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে আজকের দিনটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিডিআরের তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ করেছিলেন।’

অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্ব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।

এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।