চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীন থেকে এসেছে বিরল ও মহামূল্যবান এক ধাতু, যার নাম রোডিয়াম। পরিমাণে খুব সামান্য হলেও সোনার চেয়ে ৯ গুণ বেশি দামের এ পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে চলছে তোলপাড়।
জানা গেছে, কাঠের ছোট বাক্সে মূল্যবান এ পণ্য আমদানি করেছে নাসির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নাসির ওপাল গ্লাস অ্যান্ড ক্রোকারিজ লিমিটেড। যাতে রয়েছে ছোট আকারের ফানেলের মতো ৯টি পণ্য। শিল্পে ব্যবহারের জন্য এটি আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে গত আট বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এ পণ্য আমদানির তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
আমদানিকারক ঘোষণা দেয়- চীন থেকে আনা এ পণ্যের ওজন ২০০ গ্রাম। যার আমদানি মূল্য সাড়ে ৩৮ হাজার ৫৮০ ডলার। কিন্তু দামি পণ্য হওয়ায় পরীক্ষা শেষে খালাসের সিদ্ধান্ত দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম কায়িক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় যার ওজন পাওয়া যায় ৮১৫ গ্রাম। ঘোষণার চেয়ে চারগুণ বেশি ওজন পাওয়ায় পণ্যটির খালাস স্থগিত করে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
তবে আমদানিকারকের দাবি, আমদানি করা ‘প্লাটিনাম রোডিয়াম কভার’ পণ্যের মধ্যে মূল রোডিয়াম রয়েছে ২০০ গ্রাম। যা পণ্য উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হবে। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, পণ্য উৎপাদন কাজে ব্যবহার হলে অতীতেও এটি আমদানি করার কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির নামে আমদানির এমন কোনো তথ্য নেই। আর যদি সত্যিই ব্যবহার হয়ে থাকে, তা হলে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্য পণ্যের সঙ্গে এটি আনা হয়েছিল।
আমদানিকারকের পক্ষে পণ্যটি খালাসের দায়িত্বে ছিল সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান গালফ বিডি এন্টারপ্রাইজ। এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ওবায়দুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
কাস্টমসের এক কর্মকর্তা জানান, পণ্যটির কর হার ৩৭ শতাংশ। আমদানিকারকের ঘোষণা আনুযায়ী ২০০ গ্রাম ওজনের কর আসে ১২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর পরীক্ষায় পাওয়া ৮১৫ গ্রাম ওজনের কর আসে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। বড় অংকের কর ফাঁকির চেষ্টা করেছে আমদানিকারক। মানিমেটালস ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে মঙ্গলবার প্রতি কেজি রোডিয়ামের মূল্য চার লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৮ ডলার বা চার কোটি ১১ লাখ টাকা। যা সোনার চেয়ে ৯ গুণ বেশি।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, অতি মূল্যবান হওয়ায় পণ্যটি পরীক্ষা শেষে খালাসের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছিল। পরীক্ষায় ঘোষণার চেয়ে চারগুণ বেশি ওজন পাওয়ায় খালাস স্থগিত করা হয়। আমদানিকারকের পক্ষ থেকে পুনরায় পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় এটি আবার পরীক্ষা করার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তথ্য-ডেইলি বাংলাদেশ
আজকের বাজার/আখনূর রহমান