তিন সপ্তাহ ধরে সাগরে ভেসে থাকা ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জন শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশেষ ব্যবস্থায় তিউনিসিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন।
ব্রাক মাইগ্রেশনের প্রোগ্রাম হেড শরিফুল হাসান জানান, বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে ঢাকায় আসেন তারা।
ফেরত আসা ১৭ জনের মধ্যে আটজন মাদারীপুরের, চারজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এবং বাকি পাঁচজনের বাড়ি শরীয়তপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে।
রেডক্রিসেন্ট সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সাগরে একটি নৌকায় ভাসছিলেন ৭৫ শরণার্থী, যাদের মধ্যে ৬৪ জনই ছিলেন বাংলাদেশি। নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে পৌঁছালেও কর্তৃপক্ষ তীরে প্রথমে তাদের নামার অনুমতি দেয়নি।
তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ তখন জানায়, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে আর জায়গা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে ভাসতে থাকে। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে যান।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, আটকা পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষকে এমন নিশ্চয়তা দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ১৮ জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনোক্রমেই তাদের জারজিস বা মেডেনিনে থাকার অনুমতি দেয়নি।
এমন অবস্থায় উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তিউনিসে এনে রেড ক্রিসেন্ট ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) যৌথভাবে পরিচালিত শেল্টার হাউজে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে পাঠানো হচ্ছে।
বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম দফায় ২০ জনকে দেশে ফেরত আসার টিকিট দেয়া হলেও তিনজন আসতে রাজি হননি। ফলে বাকি ১৭ জন দেশে আসেন।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, তিনজন দেশে আসতে রাজি না হওয়ায় বিষয় নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। একইভাবে শেল্টার হাউজে অবস্থানরত আরও কিছু বাংলাদেশি এ মুহূর্তে দেশে যেতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। যার ফলে বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা তাদের সকলকে দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর পরই তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল।
দূতাবাসের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, পোশাক ও তিউনিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে। এছাড়া, তাদের সকলের আত্মীয়স্বজনের সাথে দেশে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়।
এখন উদ্ধারকৃত সবাই দেশে ফিরে না গেলে পরবর্তীতে এ রকম দুর্ঘটনায় তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানান শরিফুল হাসান। খবর ইউএনবি।
আজকের বাাজার/এমএইচ