দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে মুশফিকের অধিনায়কত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ড,বিসিবি। টেস্ট সিরিজ হারের পর মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে চলমান সমালচনার মধ্যে ৯ অক্টোবর সোমবার বিসিবি সভাপতি নজমুল হাসান পাপন একথা জানান।
সোমবার বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকের অধিনায়কত্বের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুললে এমন মন্তব্য করেন বিসিবি সভাপতি। পাপন বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে দেশে ফেরার পরই মুশফিকের অধিনায়কত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মুশফিকের সঙ্গে বসেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, মুশফিক একটু অন্য রকম, খোলামেলা কথা না বলে নিজের মধ্যে চেপে রাখে। এজন্য ওকে একটু বোঝা কঠিন।
সম্প্রতি মুশফিকের টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে মন্তব্যকে দেশের জন্য সম্মান হানিকর বলেও উল্লেখ করেন বিসিবি সভাপতি। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, এমন দাবিতে সাংবাদিকরা মুশফিককে প্রশ্ন করলে প্রতিক্রিয়ায় মুশফিক বলেন,টসে জেতাই ভুল হয়েছে, ভাই।
পাপন বলেন, পৃথিবীতে এমন কথা কেউ বলে না বা বলতে পারে না,যে টসে জেতাটাই সম্ভবত ভুল ছিল। এমন কথা কি কেউ বলে! সে যেসব মন্তব্য করছে, সেটা দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। টস নিয়ে কোনো অধিনায়ক সংবাদ মাধ্যমে এ ধরনের কথা বলতে পারে না। এটা দলের জন্য ভাল হচ্ছে না। বাংলাদেশের বডি ল্যাংগুয়েজ দেখে মনে হয়নি তারা জেতার জন্য মাঠে নেমেছে। এগুলো মুশফিকের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আর সিরিজ হারের ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি মুশফিকের দূরে ফিল্ডিং করা নিয়ে বলেন, কেউ তাকে দূরে ফিল্ডিং করতে বলেনি। সে নিজের ইচ্ছাতেই দূরে ফিল্ডিং করে। সে কোথায় ফিল্ডিং করবে সেই সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্টের ছিল না। সিদ্ধান্তটি ছিল তার ব্যক্তিগত। কেউ চাপিয়ে দেয়নি। তার কোনো অস্বস্তি বা সমস্যা আছে বোধহয়। সেটা হতে পারে কোচের সাথে, হতে পারে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে। দেশে আসার পর সমস্যার সমাধান হবে।
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেছিলেন, ‘কোচরা চেয়েছেন আমি যেন বাইরে বাইরে ফিল্ডিং করি। কারণ, আমি নাকি ফিল্ডার হিসেবে ভাল না। আমি সামনে থাকলে নাকি রান হয়ে যায়। বা আমার হাতে ক্যাচ-ট্যাচ আসলে নাকি (ধরার) চান্স থাকে না। টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা বলবে, সেটা তো আমাকে করতে হবে।
এমন মন্তব্যের পর গুঞ্জন উঠেছিল অধিনায়কত্ব হারাচ্ছেন মুশফিক। কিন্তু একদিন আগে নিজ মুখেই মুশফিক বলে দিলেন। দলনেতার চেয়ার ছাড়বেন না, তবে নেতৃত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত বোর্ডের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন মুশফিক। ‘আমি কেন সরে যাব? এটা তো ব্যক্তিগত কোনো খেলা না, দলীয় খেলা। অবশ্যই অধিনায়ক হিসেবে সব ব্যর্থতায় দায় আমার দিকেই আসবে। আমি সেটা নিচ্ছিও। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমি গর্বিত। এটা হবে বোর্ডের সিদ্ধান্ত। কারণ, তারাই আমাকে এনেছে। আমাকে সরানো হবে কি না এই সিদ্ধান্তের ভার বোর্ডের ওপর।’
হারের ব্যাপারে তিনি বলেন,পরিবেশ এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা ছিল। প্রায় ১০ বছর পর একটা কন্ডিশনে জেতাটা একটু কঠিনই। তাছাড়া দলে সিনিয়র প্লেয়ারও ছিল না। যার জন্য সে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৯ অক্টোবর ২০১৭