আমাদের দেশে ভালো জাতের গরুর অভাব আছে। এজন্য উন্নত জাতের গরু আমাদের খুব প্রয়োজন। এমন মন্তব্য করেছেন এসিআই এগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী। ২৭ মে, শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের ১১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে উপস্থিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপিকে বিনীত অনুরোধ জানিয়ে একটি উন্নত জাতের গরু উপহারের মাধ্যমে দেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে উদাহরণ সৃষ্টির আহ্বান জানান ড. আনসারী।
তিনি বলেন, দেশে আজকে গরুর মাংসের অনেক দাম। এর কারন আমাদের গরুর এফসিআর অনেক বেশি। দেশি গরুতে ১১ কেজি খাবার খাওয়ালে ১ কেজি মাংস পাওয়া যায়। আর শংকর জাতের গরুতে ৭ কেজি খাদ্যে ১ কেজি মাংস পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দেশে উন্নত জাতের ব্রাহমা গরু নিয়ে পূর্বে কিছু কাজ হয়েছিল। এ সমস্ত গরু থেকে প্রতি ৫ কেজি খাবারে ১ কেজি মাংস পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামীণ পরিবেশে এদের লালন-পালন করা যায় ও আমাদের গৃহস্থালি মেয়েদের সাথেও এরা বন্ধুসুলভ আচরণ করে। এই গরুগুলো আরো নিয়ন্ত্রিতভাবে খামারিদের পালন ও মাংস উৎপাদনের অনুমতি দিলে খামারিরা উপকৃত হবে। এতে দেশে মাংসের দাম কমে আসবে।
ড. এফ এইচ আনসারী আরও বলেন, নতুন জাত নিয়ে খামারিদের সংশয় থাকতে পারে। কিন্তু নতুন জাতই আমাদের ভবিষ্যত সম্পদ। উদাহরণ স্বরুপ, আমরা জানি ইদানিংকালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বঙ্গবন্ধু নামের একটি নতুন জাতের ধান অবমুক্ত করেছে। এই ধানের ফলন ৮ মেট্রিক টন। অথচ অন্যান্য জাতের ধানের গড় উৎপাদন ৪ মেট্রিক টন। এ জাতের ফলন অনেক ভাল। কৃষকরা প্রথম দিকে হয়তবা আশানরুপ ফলন পাবে না। কারন অনেক ধরনের রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হবে। হয়তো এগ্রোনমি প্রাকটিস কিছুটা জটিল হবে। কিন্তু এগ্রোনমি প্রাকটিস এডাপ্টেশনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সব কিছু সহজ হয়ে যাবে।
মন্ত্রীর প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়ে ড. আনসারী আরও বলেন, আপনি একটি উন্নত জাত আমাদের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে উপহার দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করুন। এর নাম হতে পারে “বাংলার গর্ব” কিংবা “সোনার বাংলা”। এ জন্য বাংলার মানুষ যুগে যুগে আপনাকে মনে রাখবে। খামারিরা লালন-পালন করে উপকৃত হবে। মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।এফসিআর কম হবে। আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম খরচে মাংস উৎপাদন করে দেশের মানুষকে খাওয়াতে পারব। দেশের বাইরে মাংস রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক মহোদয় এখানে উপস্থিত আছেন। উনি একজন অত্যান্ত ডাইনামিক প্রানি বিজ্ঞানী। উনার সহায়তায় এ কাজটি করা সহজ হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।