দেশে ২৪ ঘন্টায় কারোনায় মারা গেছে ১৬ জন, সুস্থ ১,৬৪৮

দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৪৬তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৮ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ২৫ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ১০৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ৭ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৮ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২৫ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬২৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৫২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৯৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৬ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৪ হাজার ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ১ হাজার ৫৮৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৪ লাখ ৭০ হাজার ১৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬১৬ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩৮৯টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫২০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫২২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪৮৭ দশমিক ৪০ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২০০৪ দশমিক ৭২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৬ জনের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, আর নারী ১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭০৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪০৫ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ শতাংশ; নারী ২৩ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৫ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪১ জন; যা ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩১ জন; যা ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৫৭ জন; যা ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬০৮ জন; যা ২৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ১৯৪ জন; যা ৫২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৯০ জন; যা ৫২ দশমিক ২৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২০৫ জন; যা ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৪ জন; যা ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮০ জন; যা ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০৫ জন; যা ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৬ জন; যা ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৭০ জন; যা ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৮ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৬৩৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৮৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১২ জন ও শয্যা খালি আছে ২৭টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫২০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৪৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৭টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫৪৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৬৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬২ জন এবং খালি আছে ৩০২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫২৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৪০৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৬৪৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৯৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭৩ জন, রংপুর বিভাগে ৩২ জন, খুলনা বিভাগে ৩১ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৪ জন, সিলেট বিভাগে ৬১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭২৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৪৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬২ হাজার ৬৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২২ হাজার ৩৫৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৭০৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৬৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৬৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৬৩৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৪৩৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৯৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৩৩৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪১৯টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২০২টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬২১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭০১টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৩৪৩ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৩ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৮৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩ জন এবং ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।