পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম অবৈধভাবে অবস্থান করছে। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলার জনসংখ্যার প্রায় ২০-২৫ ভাগ অবৈধ রাখাইন প্রদেশের মুসলিম। যারা ভবিষ্যতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১৫ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলা প্রশ্নোত্তর পর্বে নওগাঁ-৩ আসনের এমপি ইসরাফিল আলমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর) পরিচালিত দুটি ক্যাম্পে ৩৩ হাজার রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যানব্যুরো (বিবিএস) এর শুমারী ( অপ্রকাশিত) অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম অবৈধভাবে বাংলাদেশের ক´বাজারসহ সংশ্লিষ্ট ৫টি জেলায় অবস্থান করছে।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নতুন নয়, ১৯৭৮-৭৯ সালে মিয়ানমার থেকে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা এদেশে অনুপ্রবেশ করে, আবার ১৯৯১-৯২ সালে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন রোহিঙ্গা মুসলিম এদেশে অনুপ্রবেশ করে। এর মধ্য থেকে ইউএনএইচসিআর এর সহযোগিতায় ১৯৯১-৯২ সালে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জনকে সে দেশে ফেরৎ পাঠান সম্ভব হয়। বাকিরা অবৈধভাবে রয়ে যায়। নতুন করে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা এদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের নয়াপাড়া ও কুতুপালং শরনার্থীক্যাম্পে অবস্থানরত মিয়ানমারের শরনার্থীদেও পিছনে সরকারের প্রতিবছর ব্যয় প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমার নাগরিকরা সামাজিক, অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও পরিবেশগত ব্যাপক ক্ষতি করছে। এমনকি তারা মাদকদ্রব্য পাচার ও উৎপাদন, চোরাচালান, অস্ত্র ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে আইন- শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাচ্ছে। তারা স্থানীয় শ্রমবাজার ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যারা ভবিষ্যতে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাড়াতে পারে।
কুড়িগ্রাম-৩ এর এমপি এ কে এম মাঈদুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০১ টি সমঝোতা স্মারক ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৫ জুন ২০১৭