নতুন আরও ৩ ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে আরও তিনটি নতুন ব্যাংক আসার কথা জানান। কিন্তু তিনি নতুন ব্যাংকের অনুমোদনের কথা এমন দিনে বললেন যেদিন নতুন অনুমোদন পাওয়া একটি ব্যাংকে ‘হযবরল’অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল সোমবার বেসরকারি খাতের ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক মাহাবুবুল হক চিশতীকেও পদ ছাড়তে হয়েছে।

দেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে যে অর্ধশতাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংক আছে তাকেই চাহিদার তুলনায় বেশি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা । এই অবস্থায় নতুন ব্যাংকের অনুমোদন আসলেই কতটুকু প্রয়োজনীয় তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাদের মনে।

বিবিসি বাংলা মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর প্রকাশিত ‘আরো তিনটি নতুন ব্যাংক,কতটা প্রয়োজন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলেছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে কয়েক বছর আগে ছয়টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় ওই ব্যাংকগুলোর অনুমোদন দেওয়া নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকিং খাত নিয়ে যখন ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সেসময়ে নতুন করে তিনটি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত?

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর আগে যখন নয়টি ব্যাংক দেওয়া হয়েছিল তখন আমরা বলেছিলাম বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার সেখান থেকে আর ব্যাংক দেওয়া ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, এই নয়টি ব্যাংকের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক রয়ে গেছে। এনআরবি ব্যাংকসহ সমস্যাযুক্ত কিছু ব্যাংক আছে। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে আবারো তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়াটা আমি যুক্তিযুক্ত মনে করি না।

তিনি বলেন, শুধু আমি না, আমরা যখন ব্যাংকিং খ্যাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কথা বলি তখন সকলেই একমত যে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের খুব খারাপ অবস্থা।

তবে এতে করে ব্যাংকের গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না বলে তিনি মনে করছেন।

সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতের আইন সংশোধনের একটি বিল সংসদীয় কমিটি চূড়ান্ত করেছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হচ্ছে, যে কোন বেসরকারি ব্যাংকে একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনে এ ধরনের পরিবর্তন ব্যাংকিং খাতে লুটপাট এবং চরম অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি করতে পারে।

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবার নামে পরিচিত ছিল কতিপয় ধনী যাদের কাছে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ সম্পদ কুক্ষিগত ছিল এবং তারা প্রত্যেকে ব্যাংকের মালিক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালিরা সে ২২ পরিবারের বিরোধিতা করেছিল।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৮ নভেম্বর ২০১৭