‘কাস্টমসের সব তথ্য আপনার হাতের নাগালে’ এ স্লোগানে অনলাইনে বাংলাদেশ কাস্টমসের সব সুবিধা প্রদানের জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে বাংলাদেশ কাস্টমসের নতুন ওয়েবসাইট। মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাক্টিভিটি (বিটিএফএ) প্রকল্পের আওতায় এনবিআর ও ইউএসএআইডি যৌথভাবে এ ওয়েবসাইট তৈরি করেছে।
২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইউএসএআইডি এনবিআরের সক্ষমতা উন্নয়নে অনেক কাজ করছে। এসব কাজ শেষ হলে এনবিআরের সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। কাস্টমসের নতুন এ ওয়েবসাইট (www.bangladeshcustoms.gov.bd) চালুর মাধ্যমে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের সকল কাজের কেন্দ্রে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছি। সরকার এমন সব কাজ করছে যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। আমরা সরকারের সকল কাজকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বিদেশি দৈনিক লিখেছে বাংলাদেশ (সাবেক পূর্ব পাকিস্তান), পাকিস্তানকে (সাবেক পশ্চিম পাকিস্থান) সব দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছে। শুধু অর্থনৈতিক নয় জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতীয়, উৎপাদন, মাথাপিছু উৎপাদন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণতন্ত্রায়ন, স্বচ্ছতা অর্জন। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা তাদের ছাড়িয়ে গেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বন্যার যে চাপ এসেছে আমরা তা মোকাবেলা করতে পারবো। আর একটি চাপ আছে রাজনৈতিক চাপ। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে রোহিঙ্গা এসেছে মানবিক দৃষ্টিতে তাদেরকে আমাদের আশ্রয় দিতে হচ্ছে। আমাদের আস্থা যে আমরা যেকোন চাপ মোকাবেলা করতে পারবো।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমরা কারো কাছে অতীতের মতো দু’হাত তুলে আবেদন করি নাই যে আপনারা আসুন আমরা মহাসংকটে আছি। এমনিতে যারা বন্ধু রাষ্ট্র তারা আসবে, সহায়তা করবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, ইউএসএআইডির সাথে এনবিআরের পার্টনারশীপ রয়েছে। এ ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে পার্টনারশীপ আরও দৃঢ় হবে। নতুন এনবিআর গঠনের ক্ষেত্রে এ ওয়েবসাইট সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, এনবিআর ব্যবসার গতি বাড়াতে সহায়তা করছে। সেজন্য সিঙ্গেল উইন্ডোজ চালুর ক্ষেত্রে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করছে। কাস্টমসের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কাজ করছে এনবিআর।
ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর জেনিনা জারুজেকসকি বলেন, ইউএসএআইডির সহায়তায় বাংলাদেশ কাস্টমসের জন্য তৈরি করা এ ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। এ ওয়েবসাইটে বিপুল তথ্য রয়েছে এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি করা হয়েছে। এ ওয়েবসাইট ব্যবহারের ফলে শুল্কায়নের ক্ষেত্রে সময় বাঁচবে, রাজস্ব বাড়বে। সরকারের ভিশন ২০২১ পূরণে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে কাস্টমসের নতুন ওয়েবসাইট সম্পর্কে তুলে ধরে ইউএসএআইডির বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাক্টিভিটি এর চিফ অব পার্টি মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, কাস্টমসের নতুন এ ওয়েবসাইট একটি ডায়ানামিক ওয়েবসাইট। এতে বাংলাদেশ কাস্টমসের সকল তথ্য পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, এ ওয়েবসাইটে কাস্টমসের সকল ফর্ম পাওয়া যাবে। সব ফর্ম ডাউনলোড ও কিছু কিছু ফর্ম অনলাইনে পূরণ করা যাবে। কিছু রেজিস্ট্রেশন করা এবং পণ্য ডিক্লারেশন দেয়া যাবে। এখানে ডিউটি ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে শুল্কায়ন করা যাবে। কাস্টমসের সকল এসআরও পাওয়া যাবে। ব্যাগেজ রুল, বিদেশিগামী যাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য, বাংলাদেশে কোন কোন পণ্য শুল্কমুক্ত, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের কোন কোন পণ্য শুল্কমুক্ত, সকল কাস্টমস হাউজের ম্যাপ, ট্যারিফ ইত্যাদি থাকবে। ওয়েবসাইট বাংলা ও ইংরেজী দু’ভাষায় ব্যবহার করা যাবে।
অনুষ্ঠানের শেষে নতুন এ ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে এনবিআর সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান, এফবিসিসিআই এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিজাম উদ্দিন রাজেশ বক্তব্য রাখেন।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭