শেষ পর্যন্ত নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর থেকে পিছিয়ে এসেছে সরকার। আগামী আরও দুই অর্থবছরের জন্যে এই আইন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন আইন কার্যকর হচ্ছে না।
২৮ জুন বুধবার জাতীয় সংসদে নিজের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভ্যাট অপরিবর্তিত রাখতে তিনি অর্থমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে নানা ধরনের কথা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সাড়া দিচ্ছেন না। এ কারণে অর্থমন্ত্রীকে বলবো, আরও দুই বছর আগের নিয়মে ভ্যাট আদায় করতে।
তিনি বলেন, দেশে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন প্রণীত হয় ১৯৯১ সালে। এরপর ২০০৯ সালে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটি নিয়ে সাড়ে তিন বছর অনেক আলোচনা ও মতবিনিময় হয়। অনেক আলোচনার পর ২০১২ সালে জাতীয় সংসদে আমরাই কিন্তু আইনটি পাশ করি। তখন এতো কথা হয়নি। এখন নানা কথা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়েছে, মূলত ব্যবসায়ীদের চাপে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ কার্যকর করা থেকে সরকার পিছিয়ে এসেছে। আগামী ১ জুলাই এই আইন কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ী লবির তৎপরতা, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির আশংকা, জাতীয় নির্বাচন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় সরকার পূর্ব ঘোষিত সময়ে আইনটি কার্যকর করার ঝুঁকি নেয়নি।
উল্লেখ, ২০১২ সালে ভ্যাট আইনের সংশোধনী পাশ হয়। এই আইন অনুসারে প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত হবে। এটি হবে ভ্যাটের অভিন্ন হার। ভ্যাট ব্যবস্থাপনা চলবে অনলাইন প্রক্রিয়ায়। প্রত্যেক ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে নিবন্ধন নিতে হবে।
নতুন আইনটি কার্যকর হলে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া কঠিন হতো। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির একটি অংশ আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হতো। অন্যদিকে ভ্যাট রিফান্ডের ব্যবস্থার কারণে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হতেন। অর্থমন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জোরালোভাবে এমনটি বলে আসলেও ব্যবসায়ীরা এই আইন বাস্তবায়ন ঠেকাতে সংঘবদ্ধভাবে মাঠে নামে। নতুন আইন কার্যকর হলে পণ্য মূল্য বেড়ে যাবে এমন অজুহাতে তারা আইনটির বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার দাবি জানাতে থাকে।
আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৮ জুন ২০১৭