নাটোরের সিংড়ায় বন্যার্তদের মাঝে হুয়াওয়ের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ

নাটোরের বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবাদানে নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। এছাড়াও, হুয়াওয়ে বাংলাদেশ’র এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জর্জ লিন, নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইউএনও এম. এম. সামিরুল ইসলাম, নাটোরের সিংড়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সঞ্জয় কুমার সাহা ও হুয়াওয়ের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বন্যার্তদের মাঝে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয় পল্লীশ্রী উন্নয়ন সংস্থাকে।

ক্রমবর্ধমান জলামগ্নতার পরিমাণ ও আকস্মিক পানির স্রোতের ফলে গুরুদাসপুর, সিংড়া, নলডাঙ্গা ও বড়াইগ্রাম উপজেলাসহ নড়াইলের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আকস্মিক এ বন্যায় নতুন চর এলাকা, ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত এ অসহায় মানুষের মাঝে সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে। এই ত্রাণ বিতরণ উদ্যোগে ভাত, লাল মসুরিডাল, আলু, লবণ, চিনি, খাবার স্যালাইন ইত্যাদিসহ খাদ্য প্যাকেট পাবে এ অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার পরিবার।

এ উপলক্ষে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “ইতোমধ্যে, করোনা মহামারিতে ব্যক্তি পর্যায়ের মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সকলেই সংকটাপন্ন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তার ওপরে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে আরও কষ্টের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এমন বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে, দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ এ মহামারি চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অসহায় মানুষদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “আগে কখনও এ অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী আসতো না। নাটোরের সন্তান হিসেবে আমি আমার মানুষের কষ্ট অনুভব করতে পারি। তাই সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা আমাদের চেষ্টা চলমান রেখেছি। আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হুয়াওয়ে যে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে সেজন্য একজন এমপি হিসেবে নয় বরং এ অঞ্চলের মানুষ হিসেবে আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। শুধু এটিই নয়, বেশ কিছু দিন থেকেই আমি হুয়াওয়েকে দেখছি এবং তাদের চমৎকার কিছু সিএসআর উদ্যোগও লক্ষ্য করেছি। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হয়ে কিভাবে দেশের জন্য বিভিন্নভাবে কাজ করা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহারণ হুয়াওয়ে বাংলাদেশ”।

জর্জ লিন বলেন, “আমরা বিশ্বের সেরা ও অত্যাধুনিক উদ্ভাবনী আইসিটি সমাধান, সরঞ্জাম, সেবা সরবরাহ করি। এটিই আমাদের বিশেষত্ব। বাংলাদেশেও এই উন্নততর সেবা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। একইসাথে, মানুষ পাশে দাঁড়ানোকে আমরা দায়িত্ব মনে করি। আমাদের এই ছোট ছোট চেষ্টা হয়তো তাঁদের কষ্ট পুরোপুরি দূর করতে সক্ষম না কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে তাঁরা এইটুকু আশ্বাস পান যে তাঁরা একা নন। তাঁদের দুঃখ ভাগ করে নিতে আমরা রয়েছি, কারণ আমরা তাদের প্রতি যত্নশীল” ।

এম. এম. সামিরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিবছর সীমাহীন চ্যালেঞ্জ নিয়ে বন্যা আসে। এ সময়টাতে মানুষ কী পরিমাণ দুর্দশার মধ্য দিয়ে যায় তা কোনোদিন পরিমাপ করা যায় না এবং কোনোভাবে তা ফিরিয়েও আনা যায় না। এ সময়ে যেকোনোভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি মানুষের প্রতি আমাদের মমতা ও দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটায়। আমি জানি হুয়াওয়ে পারস্পরিক সহযোগিতায় বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশের জন্য তারা সহানুভূতিশীল, আজকের দিনে তাদের এ সহযোগিতা সেটিই প্রমাণ করে”।

পল্লীশ্রী উন্নয়ন সংস্থা, চৌদ্দগ্রাম, নাটোর-এর সভাপতি রণজিৎ কুমার বলেন, “এ বছর আকস্মিক পানির স্রোত গুরুদাসপুর, সিংড়া, নলডাঙ্গা ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় বসবাসকারী অসংখ্য মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। বহু মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি ও গবাদি পশু হারিয়েছে। হুয়াওয়ের এই উদ্যোগ নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কষ্ট কিছুটা কমাবে” ।

দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে সবসময় বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সে লক্ষ্যে মৌসুমি বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রতিষ্ঠানটি ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ – শেয়ার টু কেয়ার’ শীর্ষক কার্যক্রম শুরু করেছে।