দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। এ জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করে নিরাপদ বিনিয়োগ করতে হবে। আর এ কারণে বিনিয়োগকারীকে তার পুঁজি নিরাপত্তার স্বার্থে বিনিয়োগ শিক্ষা নেয়া খুব জরুরী বলে মনে করেন তারা।
২১ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বিষয়ে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। মূলত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
গ্লোব সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
দিনব্যাপী এ সেমিনারে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে ২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রথম প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপক মো. আহসান উল্লাহ রাজু। তিনি বিনিয়োগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। কীভাবে সঞ্চয় করতে হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি করতে হবে তার বিস্তারিত উপস্থাপন করেন তিনি।
আর দ্বিতীয় উপস্থাপনায় পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মুক্তাদির পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
এর আগে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্লোব সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে শিক্ষিত তরুণদের এ খাতে আরও এগিয়ে আসা উচিত। বিশেষ করে যারা ব্যবসায় শিক্ষা নিয়ে পড়ছেন। কারণ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের প্রধান শর্ত হল জেনে বুঝে বিনিয়োগ করা। নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য জানার কোনো বিকল্প নেই। আমি কোথায় বিনিয়োগ করছি তা নিরাপদ থাকবে কি না- আগে তা বিবেচনায় নিতে হবে।
আজিজুর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিনিয়োগের জন্য যথার্থ শিক্ষা নয়। শেয়ারবাজারে আসতে হলে অবশ্যই বিনিয়োগকারীকে তার পুঁজির নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে। এ জন্য বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই বিনিয়োগ শিক্ষা নেয়া জরুরী। তাই নিরাপদ বিনিয়োগ স্বার্থেই বিনিয়োগকারীক ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি করার ওপরে জোর দেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে শেয়ারবাজার অবদান রাখছে। এ অবদান বৃত্ত আরও বড় হওয়া জরুরী হয়ে পরেছে। তার জন্য দরকার সঠিক বিনিয়োগের জ্ঞানের চর্চা।
উপস্থিত ইস্টার্ন ইউনির্ভাসিটি শিক্ষার্থীদের উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আপনাদেরকে বিনিয়োগ শিক্ষার জ্ঞানের বিধিধ শাখায় বিচরন করতে হবে। আজকের সেমিনার এখানেই শেষ হলে চলবে না। এই বিনিয়োগ শিক্ষা সুফল সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। এ বিনিয়োগ শিক্ষার আলো সবার মাঝে জড়িয়ে দিতে হবে। কারন আপনারাই হবেন ভবিয্যত শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারী।
সেমিনারে উপস্থিত বক্তা ইস্টার্ন ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর নাইলা আল মাহমুদা, শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল মুক্তাদির (সিএফএ) ও বিশেষজ্ঞ মো. আহসান উল্লাহ রাজু বলেন, শেয়ারবাজারে ঝুঁকি মুক্ত নয়। তবে বুঝে শুনে ও বিশ্লেষন করে বিনিয়োগ করলে পুঁজির নিরাপদে রাখা যায়।
তারা আরও বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের আগে ঝুঁকির ক্ষেত্রগুলো চিহিৃত করা জরুরী। একই সঙ্গে জরুরী কোম্পানির আয়, ব্যয়, সম্পদ, পিইরেশিও, বিনিয়োগ ধরন, উদ্যোক্তা পরিচালকদের আচরন ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রগুলো চিহিৃত করা গেলে শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা পাওয়া সম্ভব। তাই ঝুঁকি ক্ষেত্রগুলো বুঝতে হলেও বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগ শিক্ষা নেয়া দরকার।
এসময় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের প্রফেসর আলী আহাদ ঠাকুর, গ্লোব সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম ইকবাল, বনি ইয়ামিন, ওয়াজে আলীসহ কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২১ অক্টোবর ২০১৭