নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে নাটোরের মহাসড়কে প্রযুক্তির ব্যবহার

দুর্ঘটনা রোধ করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে গাড়ীর গতিবেগ নির্ধারণ, কাগজপত্রের যথার্থতা যাচাই ও ড্রাইভার মাদকাসক্ত কিনা তা সহজেই নির্ণয় করছে হাইওয়ে পুলিশ। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মহাসড়ক হচ্ছে নিরাপদ, খুশি হচ্ছেন স্থানীয়রা।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-পাবনা এবং বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে নাটোরের বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ। বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের ড্রাইভার মাদকাসক্ত কিনা বা কি পরিমাণ মাদক গ্রহণ করেছে তা নির্ণয় করতে ব্যবহার করা হচ্ছে এ্যালকোহল ডিটেক্টর। সেই সাথে মহাসড়কে নির্ধারিত ৮০ কিলোমিটার গতিবেগের চেয়ে বেশী গতির যানবাহনগুলো সনাক্তে ব্যবহার করা হচ্ছে স্পিডগান। সেই সাথে সব ধরনের কাগজ ঠিকঠাক আছে কিনা তা নির্ণয় করা হচ্ছে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ডিটেক্টর (আরএফআইডি) বা স্ক্যানার প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
নাটোরের সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা যায়, সমগ্র নাটোর জেলায় মোট ১১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চারটি মহাসড়ক রয়েছে। এরমধ্যে ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বনপাড়া-হাটিকুমরুল দেশের অন্যতম দুূর্ঘটনা প্রবণ মহাসড়ক। ২০ অক্টোবর ২০১৪ এই মহাসড়কে ভয়াবহ দুূর্ঘটনায় ৩৮ ব্যক্তির প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। এ মহাসড়ক এবং নাটোর-পাবনা মহাসড়কের বনপাড়া-রাজাপুর বাজার অংশে বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ উল্লেখিত প্রযুক্তি সহযোগে টহল জোরদার করেছে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ষ্ক্যানার প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যথযথ না থাকায় ২১টি মামলার অনুক’ুলে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেছে। একই সময়ে স্পীডগান ব্যবহার করে নির্ধারিত গতির সীমা লংঘন করায় ৯৫টি মামলা দায়ের করেছে। এ্যালকোহল ডিটেক্টর ব্যবহার করে খুব সহজেই চালকের মাদকাসক্ত পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।
বড়াইগ্রাম প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট অহিদুল হক বলেন, নাটোর-বনপাড়া মহাড়সড়ক দেশের অন্যতম দুর্ঘটনা প্রবণ মহাসড়ক হওয়ায় প্রতিদিন আমাদের শংকায় দিন কাটে কখন কোন দুঃসংবাদ আসে কিনা। এটিসহ বনপাড়া-রাজাপুর বাজার মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে যানবাহন ও চালকের যোগ্যতা যাচাই করছে। এরফলে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমে আসবে। হাইওয়ে পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি।
বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, যানবাহন বান্ধব মহাসড়ক নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান পরিচালনা করার ফলে খুব সহজেই হাইওয়ের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে দুূর্ঘটনা কমিয়ে এনে মহাসড়কে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে।
বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সার্কেলের সিনিয়র এএসপি রায়হান ইবনে রহমান বলেন, মহাসড়কে দুূর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনতে প্রযুক্তি নির্ভর এই অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে। এরফলে খুব দ্রততম সময়ের মধ্যে যানবাহনের গতিবেগ, চালক মাদকাসক্ত কিনা এবং গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। এতে করে আমাদের বেশি সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে না। একইসঙ্গে খুব সহজেই হাইওয়ের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। আগামীতে আমাদের এ অভিযান আরো জোরদার করা হবে।