নির্বাচনের বছরে দেশে কালো টাকা আসতে পারে : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, নির্বাচনের বছরে দেশে কালো টাকা আসতে পারে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংককে সজাগ থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। রোববার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে রূপালী ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুহিত বলেন, ব্যাংকের ক্ষেত্রে অ্যাভডান্স-ডিপোজিট রেশিও (ঋণ ও আমানতের অনুপাত) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে ওই অনুপাত সাধারণ মাত্রার চেয়ে উঁচুতে আছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তবে এটা দেখে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার তাদের বিশেষভাবে এক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। কারণ আপনারা সবাই জানেন এ বছর নির্বাচনের বছর। এ বছর টাকা পয়সার ছড়াছড়ি বেশি হবে। কালো টাকা হয়ত যথেষ্ট আসবে বাজারে। তাই এ বছর সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন,ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে সকলেই আমাদের প্রশ্ন করে থাকেন এবং যেমন বলেন যে ব্যাংকিং অবস্থা দুর্বল। তারা ভুলে যান, আমরা কী অবস্থা থেকে ব্যাংকিং শুরু করেছিলাম।
মুহিত বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা যথন শুরু হল, তখন সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ডিফল্ট; ডিফল্ট রেট অর্ধেকের বেশি ছিল। সেখান থেকে ডিফল্ট রেট কমে এসেছে সরকারি ব্যাংকের েেত্র গড়ে ১১ পার্সেন্টের মত। তাই বলা যায়, আমরা যথেষ্ট উন্নতি সাধন করেছি এবং দেশের ব্যাংক খাত ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে। এ খাতের অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো। ব্যাংক খাত যদি দুর্বল হত, তাহলে অর্থনৈতিক উন্নয়নও সম্ভব হত না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ঋণ আমানতের এডিআর অনুপাত বেশি রয়েছে। তা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক থাকবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি মেটাতে অর্থ দিয়ে থাকে। এ নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেন। তারপরও আমাদের অর্থ দিতে হবে। কারণ একটি ব্যাংকে সমস্যা হলে পুরো ব্যাংকিং খাতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

মুহিত বলেন, রূপালি ব্যাংকের যে মূলধনের সমস্যা রয়েছে তা পূরণ করা হবে। আগামী বাজেটে তা দেওয়া হবে বলে ব্যাংক কর্তৃপকে আশ্বস্ত করেন। এর আগে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান তাদের ব্যাংকের মূলধন সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা মূলধন চান। বর্তমানে ব্যাংকে ৩৪৬ কোটি টাকা মূলধন রয়েছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সহায়তার জন্য ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি উদ্যেগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে শিল্পখাতের ৭৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। সরকার চায়, ব্যাংক খাতে ওই ধরনের শিল্প উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দেওয়া হোক। তাদের হাত ধরে উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাদের উন্নয়ন হলে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হবে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

ব্যবসায়িক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, রূপলী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো আতাউর রহমান প্রধান।
আজকের বাজার : এসএস / ওএফ/ ২৮ জানুয়ারি ২০১৮