নির্বাচন এখন প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থার আমুল সংস্কার করতে হবে।
১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। সংলাপ শেষে সাংবাদিদের তিনি এ কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা সংলাপে সভাপতিত্ব করেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন,সংসদ ভেঙে দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছি আমরা। আর নির্বাচন হবে ইসির অধীনেই। সেলিম বলেন,সংসদ ভেঙে দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক বা সহায়ক বা কোনো সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন,আমরা ভোট অনুযায়ী সংসদে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ব্যবস্থা চালু, সংরক্ষিত নারী আসন ১০০ তে উন্নীত করাসহ ১৭ দফা সুপারিশ করেছি ইসিকে।
সিপিবি অন্য প্রস্তাগুলো হলো- তফসিল ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বেই বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সমতা বিধান করতে হবে; জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে ইসির অধীনে, কোনো সরকারের অধীনে নয়। এ উদ্দেশ্যে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে।
নির্বাচনকালীন সময় সরকারের কর্তৃত্বকে সাংবিধানিকভাবে সংকুচিত করে তার অন্তর্বর্তীকালীন কাজ তত্ত্বাবধানমূলক ও অত্যাবশ্যক রুটিন কিছু কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। যতদিন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে, ততদিন আরো তিনটি ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করে দলটি।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ১০০ তে উন্নীত ও সরাসরি ভোট করতে হবে; নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ওই প্রতিনিধিকে প্রত্যাহারের বিধান করতে হবে; না ভোটের বিধান যুক্ত করতে হবে।
এছাড়া অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা; স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকা জমার বিধান বাতিল করা; জাতীয় ভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করা; জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী হতে হলে কোনো ব্যক্তিকে কমপক্ষে পাঁচ বছর রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য হতে হবে; নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা; নির্বাচনে সন্ত্রাস, পেশিশক্তির প্রভাব ও দুর্বৃত্তমুক্ত করা; নির্বাচনে ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা ও আঞ্চলিকতার অপব্যবহার রোধ করা; নির্বাচনে সবার সম-সুযোগ নিশ্চিত করা; নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণে ও নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা বিধান করা; নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও বিধির সংস্কার করা; নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্বতন্ত্র আদালত গঠন করতে হবে।
ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ সংলাপ হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত ৩১ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১২ অক্টোবর ২০১৭