নির্মাণ হচ্ছে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ খুব শিগগির শুরু হবে। জি-টু-জি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যানজট বহুলাংশে কমে যাবে। একই সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সুগম হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একনেক বৈঠকে ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের পাশ দিয়ে একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।

বিনিয়োগকারী নিয়োগে প্রথম দফায় আগ্রহপত্র আহ্বানের পর কোনো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় দফায় আগ্রহপত্র আহ্বান করা হলে সাতটি প্রস্তাব পওয়া যায়। পরে চীনা ভাইস মিনিস্টারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফরকারী দল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে প্রকল্পে চীন সরকারের সহায়তার আশ্বাস দেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে আগ্রহপত্রে সাড়া দেওয়া সংস্থাগুলোর প্রস্তাব স্থগিত রেখে একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসকে অনুরোধ করা হয়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০১৩ সালে প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালানো হয়। প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হযে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর ইন্টারসেকশন ও ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা ইন্টারসেকশন পর্যন্ত মোট ৩৫ কিলেমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং ৬ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার র‌্যাম্প নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অনুযায়ী প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ১৬৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে সিএমসি গত ২০১৫ সালের আগস্ট ভ্যাট/ট্যাক্স ব্যতীত ১১২ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের বাণিজ্যিক প্রস্তাব দাখিল করে। তবে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটি ২৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় উক্ত বাণিজ্যিক প্রস্তাবের মূল্যায়ন ও নেগোশিয়েশন স্থগিত রেখে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালের আগস্টে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া হয়ে ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ৩ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ র‌্যাম্প, নবীনগর ইন্টারসেকশনে ৭১০ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার, বিদ্যমান ১৫ দশমিক ২৮ কিলোমিটার আশুলিয়া সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং ২ দশমিক ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি সেতুসহ ড্রেন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সিএমসির বাণিজ্যিক প্রস্তাবে শুধু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও র‌্যাম্প নির্মাণের কাজ অন্তর্ভূক্ত ছিল।

আজকের বাজার: আরআর/ ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭