গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সামরিক অভিযান ঘোষণার কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ সেনারা। এরপর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এরইমধ্যে ইউক্রেনের ২০ লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ পরিস্থিতি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক ক্ষয়ক্ষতি রাশিয়াকে টলাতে পারছে না। বরঞ্চ রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে আক্রমণের পরিধি বৃদ্ধি করছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলেও রোববার হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে জাভোরিভ সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়া ৩০টি রকেট নিক্ষেপ করে। এ হামলায় ৩৫ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১৩৪ জন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি হামলার দিনটিকে কালো দিন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পশ্চিমা নেতাদের কাছে রাশিয়ার এই হামলা একটি পরিষ্কার সতর্কবার্তা যে ন্যাটো এলাকায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রুশ হামলার শিকার জাভোরিভ সামরিক ঘাঁটি পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ মাইল (২৫ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত। একসময়ের সোভিয়েতভুক্ত দেশ পোল্যান্ড বর্তমানে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে।
এর আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র পাঠানোর পথগুলোতে হামলা চালাবে রুশ সেনারা। পশ্চিমাদের পাঠানো সামরিক সহায়তায় হামলা হলে ন্যাটো এগিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গের বরাত দিয়ে রোববার এ কথা জানান ইউক্রেনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেক্সি দানিলভ।
ইউক্রেন পার্লামেন্টের টিভি চ্যানেল রাডায় দেয়া বক্তব্যে দানিলভ ন্যাটো প্রধান স্টলটেনবার্গ বলেছেন, যদি তাদের বহরে একটি বুলেটও আঘাত হানে, তবে অনুচ্ছেদ ৫ অনুসরণ করা হবে।
ইউক্রেনের এমন দাবির অবশ্য সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। ন্যাটো বা স্টলটেনবার্গ কিয়েভের দাবির সত্যতা নিশ্চিত বা অস্বীকার করে প্রকাশ্য বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে। এরই মধ্যে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। খবর-ডেইলি বাংলাদেশ
আজকের বাজার/আখনূর রহমান