ভারতে বেশ কিছুদিন ধরেই ভাগাড় কাণ্ড নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। এবার এর অন্যতম পান্ডা বিশ্বনাথ ঘড়ুই ওরফে বিশুকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হতবাক তদন্তকারী কর্মকর্তারা। জানা গেছে, ভাগাড়ের পচা মাংস বিক্রি করেই কয়েক কোটি টাকার মালিক বিশ্বনাথ।
এবেলা এক প্রতিবেদনে জানায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার অন্তর্গত গড়িয়া তেঁতুলবেড়িয়া বিবেকানন্দ সরণির বাড়ি থেকে গত বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, এই গড়িয়ার বাড়ি-সহ চার-চারটি বাড়ির মালিক বিশ্বনাথ! মাছের ব্যবসার আড়ালে বিশু ভাগাড়ের মাংসের ব্যবসা করত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
বাবা সুধীরচন্দ্র ঘড়ুইয়ের হাত ধরে মাছের ব্যবসায় আসে বিশ্বনাথ। ধীরে ধীরে বেশি লাভের আশায় শুরু করে পচা মাংসের ব্যবসা। গত দশ বছর ধরে এই মাংসের ব্যবসা করছিল সে। কলকাতা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার ভাগাড়ে মৃত পশু পড়লেই সেই খবর পেয়ে যেত বিশু।
তার পর লোক দিয়ে সেই পশুর মাংস নিয়ে আসত বিশ্বনাথের লোকেরা। সেই মাংসে ফরম্যালিন-সহ বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে তা নিজের আইস ফ্যাক্টরিতে রেখে দিত সে। তার পর কলকাতা-সহ আশপাশের রাজ্যে ও নেপাল, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশেও রপ্তানি করত বিশু।
আর ব্যবসায় রমরমার কারণে গত দশ বছরেই টাকার পাহাড় বানিয়ে ফেলেছে সে। গড়িয়ার মতো দক্ষিণ শহরতলির অভিজাত এলাকায় চার-চারটি বাড়ির মালিক বিশ্বনাথের জীবনযাপনও ছিল রীতিমতো বিলাসবহুল। প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করত না সে।
এলাকার মানুষ কোনও দিনই বিশুর এই ভয়াবহ অপকর্মের বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি। তবে বিশ্বনাথ যে মোষের মাংসের কারবার করে তা আশপাশের কয়েকজন প্রতিবেশী জানতেন।
এদিন তেঁতুলবেড়িয়ায় বিশ্বনাথের বাড়ি গিয়ে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। বারে বারে কলিং বেল বাজানোর পরেও দরজা খোলেননি পরিবারের লোকেরা। ভাগাড় কাণ্ডে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন এই পচা মাংসের ব্যবসায় অন্তত তিরিশ জনের বেশি কর্মচারী কাজ করত বিশ্বনাথের অধীনে।
জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মাংস-বিশু ও তার অপরাধ সম্পর্কে আরও নতুন নতুন তথ্য উঠে আসবে বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
এস/