পঞ্চগড়ে পুলিশ, র‌্যাব ও পাথর শ্রমিকের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুরে পুলিশ, র‌্যাব ও পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের সংঘর্ষে রবিবার এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও র‌্যাবের ১১ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত চারজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। নিহত জুমারউদ্দিন(৫৫)তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের গনাগছ গ্রামের দেবারুর ছেলে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বোমা মেশিন(ড্রিল ড্রেজার)দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল। পঞ্চগড়ের বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী যোগদানের পর থেকে সকল প্রকার পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেন। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস এই পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে শনিবার রাতে পাথর উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয় তেঁতুলিয়ার ভজনপুর এলাকার পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। পাথর উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠন ও ড্রেজার মালিকদের উসকানিতে রবিবার সকাল থেকে ভজনপুর বাজারে অবস্থান নেয় কয়েক হাজার পাথর শ্রমিক।

 

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাথর শ্রমিকরা সকাল ১০টায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের ভজনপুরে সড়ক অবরোধ করেন। তারা লাঠিসোটা নিয়ে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পুলিশ অবরোধকারীদের বাঁধা দিলে পাথর শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে পাথর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

এ সময় পুলিশ পাথর শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। উভয়ের সংঘর্ষে জুমারউদ্দিন নামে এক পাথর শ্রমিক নিহত হয়। সংঘর্ষে পুলিশ ও র‌্যাবের ১১ সদস্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. সিরাজউদ্দোলা পলিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পাথর শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার শরীরে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত না করে কিছু বলা যাবে না।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, মূলত বোমা মেশিন চক্রের সদস্য ও সুবিধাভোগীরা শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছে। তারা লাঠি সোটা নিয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের ওপর হামলা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এমনকি আহত পুলিশদের হাসপাতালে নিতেও বাঁধা দেয়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশের বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।
সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান