পঞ্চম স্প্যান বসিয়ে পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান

এবার স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বসানো হলে পঞ্চম স্প্যান। শুক্রবার (২৯ জুন) বেলা ১১টার পর স্প্যানটি বসানোর কাজ শুরু হয়ে দুপুর পৌনে একটা নাগাদ শেষ হয়। এর মাধ্যমে দেশের সব চেয়ে বড় এই সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভেয়ার (সিএসসি) মীর ফারুক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর স্প্যানটি বসানো হয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে স্টিলের অবকাঠামো স্প্যানটি উঠছে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে। এমন ৪১টি স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতুটি তৈরি করা হবে।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান ই’-তে করে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে জাজিরা প্রান্তে স্প্যানটি আনা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি এসে পৌঁছে। এমন ৪১টি স্প্যান জোড়া দিয়েই তৈরি হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির কাছাকাছি ক্রেনটি নেয়া হয়। পরে ক্রেন দিয়ে ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির ওপরে স্প্যানটি তোলার কাজ শুরু হয়। দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে স্প্যানটি পুরোপুরি খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়।

সেতুর প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানান, চারটি স্প্যান বসানোর পর সেতুর ৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছিলো। আর পঞ্চম স্প্যানটি বসানোর পর সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো। এবার সেতুর ষষ্ঠ স্প্যান বসানোর কাজে হাত দেওয়া হবে। আর এটিও জাজিরা প্রান্তে বসানো হবে।

প্রকোশলীরা আরও জানান, পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যান ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজন। মোট ৪২টি পিলারের ওপর স্প্যান বসবে ৪১টি। ৪০টি পিয়ার থাকবে নদীর ওপর ও বাকি দুটি নদীর তীরে।

এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান এবং গত ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যানটি বসানো হয়। সর্বশেষ গত ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়েছে। এক মাস পর আরেকটি স্প্যান বসানো হলো ।

এদিকে পদ্মা সেতুর সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৫৬ শতাংশ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার সকালে পদ্মা সেতুতে পঞ্চম স্প্যান স্থাপন উপলক্ষে মুন্সিগঞ্জে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। চলতি বছরের অক্টোবরে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হলে উভয় প্রান্তের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হবে।

আজকের বাজার/এমএইচ