পদ্মা সেতুর ওপর বসানো হয়েছে ৩৯তম স্প্যান। পুরো সেতু সম্পূর্ণ হতে এখন বাকি থাকল আর মাত্র দুটি স্প্যান।
শুক্রবার দুপুরে ‘২-ডি’ নামের নতুন স্প্যানটি ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয়। যার ফলে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৫ হাজার ৮৫০ মিটার অংশ।
এর আগে, সকাল ৯টার দিকে মাওয়া কুমারভোগের কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ‘তিয়ান ই’ নামের ভাসমান জাহাজ স্প্যানটি নিয়ে সেতুর উদ্দেশে রওনা দেয়।
এখন ‘২-ই’ নামের ৪০তম স্প্যানটি ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটি এবং ‘২-এফ’ নামের ৪১তম স্প্যানটি ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর বসলেই পদ্মা সেতুর পুরো ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশ যুক্ত হয়ে যাবে। নতুন স্প্যানগুলো বসছে মাঝ নদীতে।
বাকি দুই স্প্যান ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে বসিয়ে দেয়া হবে বলে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানিয়েছেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর মোট ৪১ স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি বসানোর পর গত ১৯ নভেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন যে বাকি চার স্প্যান ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বসবে।
মন্ত্রী বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১০৯তম বোর্ড সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বলেছিলেন, মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি শতকরা প্রায় ৯১ ভাগ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮২ ভাগ।
এদিকে, স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে সেতুতে ১ হাজার ৮৪৮টি রেলওয়ে স্ল্যাব এবং ১ হাজার ২৩৮টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় এ সেতু। এখানে ৪২ খুঁটিতে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১ স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
মূল সেতু নির্মাণ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেক প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
বহুমুখী এ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে সেতুর কাঠামো। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে পদ্মা সেতু।