পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর ঘটনায় উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, স্প্যান বসানোর পরে তিনি এবং তার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাষ্ট্রে বসেই অনেক আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন।
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্যে তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনা মঞ্চে যান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের বিশ্বাস, আস্থা অর্জনের চেয়ে রাজনীতিকের জীবনে বড় প্রাপ্তি আর কিছু হয় না। অনেকেই সন্দিহান ছিল এরকম খরস্রোতা নদীতে (পদ্মায়) সুপারস্ট্রাকচার করা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওবায়দুল কাদের স্প্যান বসানোর উদ্বোধনে দেরি করতে চেয়েছিল। আমি বলেছি- না। এটা নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। অনেক মানুষকে অপমানিত হতে হয়েছিল। এক সেকেন্ডও দেরি করবো না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকান সময় ৩টার সময় ম্যাসেজ পেলাম সুপারস্ট্রাকচার বসেছে। আমি ছবি চাইলাম। ওই ছবি দেখে আমরা দুইবোন কেঁদেছি। অনেক অপমানের জবাব দিতে পারলাম। বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে মর্যাদা নিয়ে থাকুক।
প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বসভায় তুলে আনা আমার লক্ষ্য ছিল। এটুকু বলবো, যা কিছু দেশের জন্য করতে পেরেছি, যা কিছু অর্জন, সবই এদেশের মানুষের সমর্থনে, এ দেশের মানুষের দোয়ায়।
এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। বিপন্ন মানুষকে আশ্রয় দেওয়া যেকোনো মানুষের দায়িত্ব। মানবেতর জীবনযাপন করছিল তারা (রোহিঙ্গারা), তাদের ওপর অত্যাচার চলছিল। প্রথমে যখন তারা আসছিল তখনও আমরা জানি না আসলে কী অবস্থা। যেভাবে গণহত্যা ঘটছে তা জেনে খুব স্বাভাবিকভাবে তাদের আশ্রয় দিতে হলো।
তিনি বলেন, যদি প্রয়োজন হয় একবেলা খাবো, আরেকবেলার খাবার ওদের ভাগ করে দেবো। বাংলাদেশ যদি এ অবস্থান না নিতো তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এত দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারত না।
এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও মানসিক দৃঢ়তার কারণেই কেবল পদ্মা সেতুর স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহেই এই নির্মাণকাজ এতো দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সবই ছিল, কেবল ছিলেন না এই প্রকল্পের (পদ্মা সেতু প্রকল্প) রূপকার (শেখ হাসিনা)। আমি বারবার বলেছিলাম সাতদিন পিছিয়ে দিই। তখন তিনি বলেছেন,গভীর কমিটমেন্ট নিয়ে কাজ করেন। আমার জন্য পদ্মা সেতুর কাজ এক মিনিটও বিলম্বিত হবে না। সেটাই আমদের প্রেরণা।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৭ অক্টোবর ২০১৭