পাঁচদিনের মধ্যে টেকনাফের সকল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ করিয়ে দেবে বদি

স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের এক জায়গায় জড়ো করে টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক তালিকার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বদি।

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তার সাথে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়ে বদি বলেন, তোমরা যা করেছো, আর করবে না। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে (বুধবার) আমার সাথে যোগাযোগ কর। আমি আত্মসমর্পণ করিয়ে দেব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফের লামাবাজারে নিজের বাড়িতে সংসদ সদস্য স্ত্রীকে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

ইয়াবা চোরাচালানে জড়িতদের আত্মসমর্পণের জন্য পাঁচদিনের সময় বেধে দিয়ে তিনি বলেন, “উখিয়া-টেকনাফে কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ী থাকতে পারবে না। কেউ যদি আত্মসমর্পণ না করে, পরে তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে। টেকনাফের ছেলেহারা মা-বাবা, স্বামীহারা স্ত্রী ও বাবাহারা সস্তানদের কথা চিন্তা করে এ উদ্যোগ নিয়েছি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত এই শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী উপস্থিত ইয়াবা চোরাচালানীদের উদ্দেশে আরও বলেন, তোমরা যারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত আছ, যারা তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্তের বাইরে আছ তোমরা আত্মসমপর্ণ করো। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আমার সাথে যোগাযোগ কর। আমি আত্মসমপর্ণ করিয়ে দেব।

সাবেক সাংসদ বদি বলেন, তোমরা যা করেছো করেছো, আর করবে না। এসো সবাই মিলেমিশে তোওবা ( এমনটা না করার অঙ্গীকার) করি, টেকনাফের মধ্যে এটা প্রমান করবো আমরা ইয়াবামুক্ত হয়েছি।

মতবিনিময় সভায় বদিপত্নী নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহিন আকতার ইয়াবা কারবারিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আত্মসমর্পণ না করলে তাদের দেশ ছাড়তে হবে।

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, ভাইস-চেয়াম্যান রফিক উদ্দিনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তালিকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আবদুর রহমান বদির নাম। গত দুই মেয়াদের এই সাংসদের বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবারিদের মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ইয়াবা পাচারের ‘হোতা’ হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায়ও নাম ছিল তার। গত বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতদের মধ্যে বদির এক বেয়াইও ছিলেন।

এসব কারণে সমালোচিত বদি এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, তার স্ত্রী শাহিন আকতার চৌধুরী নৌকার প্রার্থী হিসেবে কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে তালিকায় শীর্ষে থাকা ইয়াবা ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বদি সবাইকে আত্মসমপর্ণের কথা বলেছেন। কিন্তু তাকে কে আত্মসমপর্ণ করাবে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সবার মাঝে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, কোনো অপরাধী অপরাধ স্বীকার করে আত্মসমপর্ণ করতে চাইলে তা স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে। এমপি আবদুর রহমান বদি জনপ্রতিনিধি হিসেবে হয়তো নিজ তাগিদে সবাইকে আত্মসমপর্ণ হওয়ার জন্য বলেছেন। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ