বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরু হচ্ছে ৫ ফেব্রুয়ারি। শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এবারের আসরের 'প্লেয়ার ড্রাফট'। প্লেয়ার বাই চয়েজ পদ্ধতিতে হয়েছে এই ড্রাফট। পাশাপাশি আগের দল থেকে পাঁচজন ক্রিকেটার ধরে রাখারও সুযোগ পেয়েছে ক্লাবগুলো। তবে দল গঠনে সবচেয়ে বড় চমকটি দিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। ড্রাফটে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পেয়েই তা লুফে নিয়েছে প্রথম বিভাগ থেকে এবারই ঢাকা লিগে উঠে আসা ক্লাবটি।
প্লেয়ার্স ড্রাফটের পর দলগুলোর কোচরা মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমের। যেখানে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের প্রধান কোচ খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারেননি তার দল নিয়ে। দেশের অন্যতম সেরা এই কোচ জানিয়েছেন, রেলিগেশন থেকে মুক্তি পাওয়াই হবে দলটির মূল লক্ষ্য। তবে নিজেদের দল গঠন নিয়ে খুশি প্রাইম ব্যাংকের কোচ খালেদ মাসুদ পাইলট, শাইনপুকুর ক্রিকেট দলের কোচ ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স ও ঢাকা আবাহনীর সহকারী কোচ তাহলা জুবায়ের।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব অধিনায়ক হিসাবে পেয়েছে জাতীয় দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। এছাড়া পেসার রুবেল হোসেনকেও পেয়েছে ক্লাবটি। নিজের প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলোয়াড় পেয়েছেন জানিয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও প্রাইম ব্যাংকের কোচ পাইলট বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংক দল ভালো হয়েছে। যে দল আমরা আশা করেছিলাম, সে ধরনের কিছু খেলোয়াড় পেয়েছি। আইকন হিসেবে মাহমুদউল্লাহকে পেয়ে ভীষণ খুশি। পেস বোলার রুবেলকে পেয়েছি। আগের মৌসুমে ভালো খেলা কিছু খেলোয়াড়কে পেয়েছি। প্রতিটা দলই ভালো, এই সংস্করণে প্রতিটি দলের ব্যবধান কম থাকে। দুই-একটা দল বড় হয়। কিন্তু একের সঙ্গে ১২ নম্বরের খুব একটা পার্থক্য থাকে না। যেকোনো দল যেকোনো দলকেই হারাতে পারে। আশা করি ভালো হবে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ।’
এবারের ড্রাফটের বড় চমকটি দেখিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। প্রথমবারের মতো ঢাকা লিগে উঠে আসা ক্লাবটি পেয়েছে বাংলাদেশের সুপার আইকন ক্রিকেটার মাশরাফিকে। যদিও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শাইনপুকুরের হয়ে না খেলে আবাহনীতেই খেলবেন মাশরাফি। কারণ ড্রাফটে পাওয়া খেলোয়াড়দের অদল বদল করার সুযোগ রয়েছে ক্লাবগুলোর। তবু তরুণ কিছু উদীয়মান খেলোয়াড় রয়েছে দলটিতে। আছেন আফিফ হোসেন, নিউজিল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ মাতাচ্ছেন যিনি।
তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে শাইনপুকুরের কোচ ফয়সাল হোসেন ডিকেন্সও তাই সন্তোষ জানিয়ে বলেছেন, ‘আসলে নতুন দল হিসেবে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, আমাদের দলটা একেবারেই তরুণ। আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একজনকে আইকন হিসেবে পাওয়া যে সবাইকে গাইড করতে পারবে। আমাদের যে খেলোয়াড় আছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের আফিফ, সাইফউদ্দিন, সাদমান—সবাই উদীয়মান খেলোয়াড়। মোটামুটি ভালো দলই হয়েছে।’
এবার সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠন করতে পেরেছে আবাহনী লিমিটেড। তারা এবার ড্রাফটে পেয়েছে নাসির হোসেনকে। গত আসরে নাসির খেলেছিলেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে। ৮ ম্যাচে ২৪০.০০ গড়ে করেছিলেন ৪৮০ রান। ছিলো ২টি সেঞ্চুরি ও ৩টি হাফ সেঞ্চুরি। দলকে চ্যাম্পিয়ন করায় ছিলো তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নাসির ছাড়াও আবাহনী পেয়েছে জাতীয় দলের ড্যাশিং পেসার তাসকিন আহমেদকেও। পাশাপাশি ধরে রেখেছে সদ্য টেস্ট অভিষেক হওয়া তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তর মতো খেলোয়াড়কেও।
তাই তৃপ্তির সুর আবাহনীর সহকারী কোচ তালহা জুবায়ের কণ্ঠে। তিনি জানিয়েছেন, ‘আবাহনী ভারসাম্যপূর্ণ দল পেয়েছে। আমরা খুশি। দুজন বাঁহাতি স্পিনার আছে সাকলাইন-সানজামুল ও ওপরের দিকে ব্যাটসম্যান শান্ত, সাইফকে ধরে রেখেছি। নাসিরকে পেয়ে আমরা আসলে খুবই খুশি। আগের মৌসুমে নাসির যেভাবে খেলেছে আশা করি সেটা এবারও ধরে রাখবে।’
আজকের বাজার: সালি / ২০ জানুয়ারি ২০১৮