পাল্লায় পড়ে গোল্লায় যাওয়া

রনি রেজা :
‘বন্ধু’ অতি ছোট্ট একটি শব্দ। অথচ এর বিস্তৃতি কত ব্যাপক, কত বিশাল এর অর্থ। এর সংজ্ঞা নির্দিষ্ট কোন গণ্ডির মধ্যে নেই। বন্ধুত্ব হলো আত্মার সঙ্গে আত্মার নিবিড় সম্পর্ক। তবে বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে টিনেজারদের। কারণ বিপথগামী বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে অনেকেরই গোল্লায় যাওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে।

কথায় আছে ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ ঠিক তাই। একজন ভালো বন্ধু যেমন মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তেমনি বিপথগামী বন্ধুরা হয়ে ওঠে মানুষের পতনের কারণ। মানুষ চলার পথে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় বন্ধুদের দ্বারা। তাইতো মানুষের বন্ধু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বন্ধু সম্পর্কে হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, ‘সেই তোমার সত্যিকার বন্ধু যে তোমার সাথে থাকে, তোমার কল্যাণের জন্য নিজের ক্ষতি করতে প্রস্তুত থাকে। দৈব-দুর্বিপাকে পড়ে তোমার অবস্থা শোচনীয় হলে সে নিজের সুখ বির্সজন দিয়ে তোমাকে সুখ দান করে।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে বন্ধুত্বের তালিকাও পরিবর্তন হতে থাকে। তবে বন্ধু বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে কৈশোরকাল। শৈশব পার হয়ে যখন কৈশোরে পা রাখে তখনই পরিচিত হতে থাকে নতুন ভুবনে। বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে বন্ধুত্বের জগৎ। এসময় যদি বন্ধু নির্বাচনে একটু ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। পড়ে যায় অসৎ বন্ধুদের পালায়। তাহলে হয়ে যায় পথভ্রষ্ট। মা-বাবার নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে অপার স্বাধীনতায় সন্তানটি এক সময় তার গন্তব্য খুঁজে পায় না। হাবুডুবু খায় অন্ধকার পথে। একটি অসৎ সঙ্গই ধ্বংস করে দিতে পারে একটি স্বপ্নময়ী জীবন। একটি পরিবারের ভরসা।

একদিনে বন্ধুত্ব হয়ে ওঠে না। প্রথমে পরিচয় এরপর জানা শোনা। এরপর ধীরে ধীরে গাঢ় হতে থাকে বন্ধুত্ব। আর এসময়টায় কিছুটা সতর্ক থাকলেই ভাল বন্ধু নির্বাচন করা সম্ভব। অসৎ বন্ধুর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য। একজন অসৎ সঙ্গের অন্যতম সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা একজনের অনুপস্থিতিতে অন্যজনের ইমেজ ধ্বংস করে। একজনের কাছে এসে অন্যজনের দোষ চর্চা করতে ব্যস্ত থাকে। সব কিছেুরই একটা নেতিবাচক অর্থ দাড় করায়। এরা কারো মতামতের মূল্যায়ন করতে জানে না। সবসময় নিজের মতকেই অন্যের উপরে চাপাতে পছন্দ করে। এরা কেবল নিজেকেই যোগ্য প্রমানে ব্যস্ত থাকে। অন্যের প্রতিভা স্বীকার করতে জানে না।