পুঁজিবাজার থেকে ১০৬৩ কোটি টাকা তুলতে চায় ৪ কোম্পানি

রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০৬৩ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চায় তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো: আরএসআরএম লিমিটেড, জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড এবং এবি ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে আরএসআরএম এবং ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড প্রতিটি রাইট শেয়ারের বিপরীতে প্রিমিয়াম নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও জাহিন স্পিনিং ও এবি ব্যাংক কোনো প্রিমিয়াম দাবি করেনি। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরএসআরএম লিমিটেড: কোম্পানিটি ২আর:৩ অনুপাতে অর্থাৎ তিনটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে দু’টি রাইট শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এতে ১৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যার পরিমাণ ৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০। প্রতি ৩টি শেয়ারের বিপরীতে ২টি করে রাইট শেয়ারের হিসেবে কোম্পানিটি মোট ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০টি শেয়ার রাইট বাবদ ইস্যু করবে। আর প্রতিটি রাইট শেয়ারের বিপরীতে ২৫ টাকা (ফেসভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে প্রিমিয়াম ১৫ টাকা) নিলে কোম্পানিটি রাইটের বিপরীতে ১৪৪ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। গত ১২ অক্টোবর কোম্পানির ইজিএম অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিএসইসির কাছে রাইট শেয়ার অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটি আবেদন করে।

জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড: কোম্পানিটি ১আর:১ অনুপাতে অর্থাৎ একটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এতে কোনো প্রকার প্রিমিয়াম ছাড়া ফেসভ্যালু ১০ টাকায় শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কোম্পানিটি ৯ কোটি ৮৫ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। আর প্রতিটি রাইট শেয়ারের বিপরীতে ১০ টাকা কোম্পানিটি রাইটের বিপরীতে ৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। গত ১২ জুলাই কোম্পানির ইজিএম অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিএসইসির কাছে রাইট শেয়ার অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটি আবেদন করে।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড: কোম্পানিটি ৪:৫রা বা ৪টি শেয়ারের বিপরীতে ৫টি রাইট শেয়ার ইস্যু করবে। ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ২০ টাকা মূল্যে এ শেয়ার ছাড়তে চায় কোম্পানিটি। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যার পরিমাণ ১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৫। প্রতি ৪টি শেয়ারের বিপরীতে ৫টি করে রাইট শেয়ারের হিসেবে কোম্পানিটি মোট ১৮ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৯১৮টি শেয়ার রাইট বাবদ ইস্যু করবে। আর প্রতিটি রাইট শেয়ারের বিপরীতে ২০ টাকা (ফেসভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে প্রিমিয়াম ১০ টাকা) নিলে কোম্পানিটি রাইটের বিপরীতে ৩৭১ কোটি ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৫ টাকা সংগ্রহ করবে। এ জন্য কোম্পানিটি আগামী ৩০ ডিসেম্বর জরুরি সাধারণ সভা (ইজিএম) আহবান করেছে। জরুরী সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের পর কোম্পানিটি বিএসইসির কাছে রাইট শেয়ার অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।

এবি ব্যাংক লিমিটেড: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ সমাপ্ত বছরে সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ায় রাইট শেয়ার প্রস্তাবে পরিবর্তন এনেছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ। পরিবর্তীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংকটি প্রতি ৩টি শেয়ারে ২টি রাইট শেয়ার (৩:২আর) ইস্যু করবে। এর আগে প্রতি ৫টি শেয়ারের বিপরীতে ৪টি রাইট শেয়ার ইস্যু করার ঘোষণা দিয়েছিল। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যার পরিমাণ ৬৭ কোটি ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ৬১৪। প্রতি ৩টি শেয়ারের বিপরীতে ২টি করে রাইট শেয়ারের হিসেবে কোম্পানিটি মোট ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৪১০টি শেয়ার রাইট বাবদ ইস্যু করবে। আর প্রতিটি রাইট শেয়ার ফেসভ্যালুতে ইস্যু করে কোম্পানিটি রাইটের বিপরীতে ৪৪৯ কোটি ২৬ লাখ ২৪ হাজার ১০০ টাকা সংগ্রহ করবে। কোম্পানিটি পরিবর্তীত সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাবে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) হবে। বিশেষ সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের পর কোম্পানিটি বিএসইসির কাছে রাইট শেয়ার অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে।

এতে দেখা যায়, আলোচ্য চার কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০৬৩ কোটি ১২ লাখ ৯ হাজার ৪৭৫ টাকা উত্তোলন করবে।

আজকের বাজার: এলকে/ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭