পুরো গাছ থেকে যেন বয়ে বয়ে পড়ছে সোনাঝরা সোনালু ফুল

জয়পুরহাটে দেখা যায় এই মনোমুদ্ধকর দৃশ্য। সোনালু ফুলের ঝলমলে রুপ দেখে মনে হয় কোন রুপসী কন্যা এইমাত্র হলুদের পিঁড়িতে বসলো। পুরো গাছ থেকে হলুদ যেন বয়ে বয়ে পড়ছে।

গ্রীষ্মের তাপদাহে মানুষ যখন ওষ্টাগত সেই সময় বর্ণিল ফুলের সমারোহ চার পাশের রুক্ষতাকে ম্লান করে দেয়। লাল কৃষ্ণচূড়ার ফাঁকে উঁকি দেয়া বেগুনি, জারুল ফুল ছাড়াও আপন মহিমায় ঝলমল করছে সোনাঝরা সোনালু ফুল। শীত বসন্তে সোনালু গভীর ভাবে ঘুমিয়ে থাকে।

বৈশাখের শুরুতে সে ঘুম ভেঙ্গে আড়মোড়া দেয়। পাঁচ পল্লবের দীর্ঘ মঞ্জুরির এ ফুলগুলো ফুটতে থাকে মাঝ গ্রীষ্মে। দেখতে দেখতে ফুলে ছেয়ে যায় পুরো গাছ। জাগতে থাকে নতুন পাতা। সোনালুর প্রধান আকর্ষণ হলো লম্বা ঝুলন্ত পুষ্পমঞ্জুরি।

কিশোরীর কানের দুলের মতো বৈশাখী হাওয়ায় দুলতে থাকে ফুলের থোকাগুলো। আবার ফুলের ফাঁকে দেখা যায় লম্বা ফল। পূর্ব-এশিয়া থেকে আগত এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ক্যাশিয়া ফিস্টুলা। ইংরেজী নাম গোল্ডেন শাওয়ার। এক সময় এগাছ আমাদের উপ-মহাদেশেও ছিল।

মহাকবি কালিদাসের ”মেঘদূত” কিংবা ব্যাসের ”ভগবত” সব খানেই এ ফুলের গুণ-কীর্তন করা হয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চল ছাড়াও জাতীয় সংসদ ভবন, মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পাকসর্হ বিভিন্ন সড়কের মাঝপথে সোনালু ফুলের গাছ দেখা যায়।

সোনালুর ফুল ফল সবই বানরের প্রিয় খাবার। তাই সোনালুর ফলকে বানরের লাঠিও বলা হয় কোন কোন এলাকায়। সোনালুর কাঠ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হলেও অনেক ঔষধী গুণাগুন রয়েছে। সোনালুর ফলের বিভিন্ন অংশ বাত, বমি, প্রতিরোধে কাজ করে।

বীজ সহজে অঙ্কুরিত হয় তবে গাছের বৃদ্ধি খুব ধীরে। সোনালু গাছ যত্ন করে না লাগালেও আপন মনেই বেড়ে ওঠে। গরু-ছাগল এ গাছ খায়না। বেড়ে ওঠার সময় তেমন দৃষ্টিতে না পড়লেও ফুল ফোটার পর দেখে সবার মন-প্রণ প্রশান্তিতে ভরে যায়। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান