প্রতিবন্ধীদের জীবন কাহিনী গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহবান

প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা বা করুনার পাত্র নয়। তাদেরকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জীবন কাহিনী গণমাধ্যমে তুলে ধরতে এবং তাদের জন্য কি করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ করতে বলিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারেন সংবাদকর্মীরা। প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের অভিশাপ নয়, তারা যে পরিবার ও সমাজের আশির্বাদ হতে পারে সে বিষয়গুলো সাংবাদিকরা লেখা ও প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে জানাতে পারেন।

রোববার ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এসব কথা বলেন।

‘এক্সসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ ও ‘ডিসএবিলিটি রাইটস ফান্ড’ এর সহযোগিতায় ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মো: মোশারফ হোসেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে সরকার খবই আন্তরিক। প্রতি মাসে ৭০০ টাকা করে ৮ লক্ষ ২৫ হাজার প্রতিবন্ধীকে ভাতা দিচ্ছে সরকার। ৮০ হাজার প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৫০০-১২০০ টাকা করে উপবৃত্তি দিচ্ছে। ১৩০টি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র প্রতিবন্ধীদের থেরাপি ও অন্যান্য সেবা দেয়া হচ্ছে। আরো ৪০ টি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে শিগগির। এছাড়া ৩২ টি মোবাইল থেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।

মন্ত্রী বলেন, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকুরীর ক্ষেত্রে এতিম ও প্রতিবন্ধী কোটায় ৫-১০ শতাংশ ও অন্যান্য শ্রেণীতে ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সরকার প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ‘প্রতিবন্ধী কল্যাণ ও সুরক্ষা ট্রাষ্ট আইন’ এবং ‘নিউরো ডেভেলপমেন্ট সুরক্ষা ট্রাষ্ট আইন’ দু’টি আইন করেছে। এ আইন দু’টির বিধিমালাও প্রণীত হয়েছে। ৬৪টি জেলায় ও সকল উপজেলায় কমিটি গঠন করা হয়েছে যাতে করে আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন করা যায়।

শাজাহান খান বলেন, ‘নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধিন বিআইডব্লিউটিসি’র ঢাকা-বরিশাল রুটে স্টিমারে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি কেবিন রিজার্ভ থাকে। ব্যক্তি মালিকানাধীন লঞ্চে যাতে দক্ষিণ অঞ্চলে যাত্রীবাহী প্রতিটি লঞ্চে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি কেবিন রিজার্ভ থাকে সে জন্য আমার মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হবে।’ এছাড়া চাকুরী ক্ষেত্রে সর্বত্র প্রতিবন্ধী কোটায় যাতে চাকুরী নিশ্চিত হয় সেজন্য সর্বত্র সুপারিশ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
এসময় তিনি প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সরকারী বিভিন্ন সংস্থা, ধনাঢ্য ব্যক্তি, শিল্প ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতি মন্ত্রী আহবান জানান।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সংগঠন ‘সুইড’ বাংলাদেশ-এর ক্রীড়া সম্পাদক মেজর (অব:) ইয়াদ আলী ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার প্রামাণিক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মহামুদ, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের মহাসচিব ড. সেলিনা আক্তার, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা কর্ণেল (অব:) মোতাহার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ‘সাইটসেভার্স’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর খন্দকার আরিফুল ইসলাম।

আজকের বাজার: এনএল/ এসএস/এলকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭