প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে শিশু হত্যা: ননদ-ভাবীর যাবজ্জীবন

জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে নাদিরা বেগম (৫) নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে ননদ ও তার ভাবীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আরো ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. হায়দায় আলী এ আদেশ দেন। দণ্ডিতরা হলেন- ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাও গ্রামের মৃত তারাবুদ্দীনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন ও তারই সৎ ভাই ভুবন আলীর স্ত্রী তহমিনা খাতুন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাও গ্রামের জনৈক মহসিন আলীর সঙ্গে প্রতিবেশী মাজেদা খাতুনের মধ্যে পাঁচ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশী মহসিনকে মামলায় ফাঁসাতে মাজেদা খাতুন পরিকল্পনায় গত ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুরে অপর প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুসের পাঁচ বছর বয়সের শিশু কন্যা নাদিরা বেগমকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে মাজেদা ও তার সৎ ভাইয়ের স্ত্রী তহমিনা শিশুটির গলায় শাড়ির আঁচল পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শিশুটির লাশ বাড়ির অনতিদূরে জনৈক দুলালের ভুট্টাক্ষেতে ফেলে রাখে। পরে হত্যাকারী মাজেদা প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে দাবি করে শিশুটিকে মহসিন নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণ করে হত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। এ ঘটনায় শিশুটির পিতা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন।

ঘটনার পরদিন প্রকৃত ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে পুলিশ প্রকৃত আসামি মাজেদা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে মাজেদা ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে পুলিশ তহমিনা খাতুনকেও গ্রেপ্তার করে।

তদন্ত শেষে পীরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহেদ আলী তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন এবং অপর আসামি মহসিন আলীকে চার্জসিট থেকে অব্যাহতি দেন।

পুলিশের চার্জসিট, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, আসামিদের জবানবন্দি এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ননদ মাজেদা ও ভাবী তহমিনাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৯ নভেম্বর ২০১৭