প্রথম ধাপে দেশের ২৪ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ চলছে

প্রথম ধাপে দেশের ২৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
শনিবার এসব পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমরাও মাঠে রয়েছেন।
ইসি সচিবালয়ের যুগ্মসচিব (পরিচালক জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান বাসস’কে জানান, ইতোমধ্যে ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় পরিবেশ ও পরিস্থিতি ভালো। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে। কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ইভিএমে ভোটের সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোটের দিন যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাত থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সব নির্বাচনী এলাকায় মোটর সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গতকাল মধ্যরাত থেকে আজ রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিক আপ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনের গাড়ি এবং হাইওয়ে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
এই ধাপের নির্বাচনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ১ হাজার ১৬০ জন। প্রথম ধাপের নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি-জাপা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ ৫টি দলের ৯৩ জন মেয়র প্রার্থী। পাশাপাশি মেয়র পদে লড়ছেন বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও। এবারে পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। ২৪ পৌরসভায় সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৬৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮০১ জন।
প্রতিটি পৌরসভায় ১ জন মেয়র, ৩ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও ৯ জন করে সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। ভোটের পরপরই ফল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য টহল শুরু করেছে গত শনিবার থেকেই। চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে আগামীকাল পর্যন্ত। সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
আগামীকাল যেসব পৌরসভায় ভোট হবে তা হলো-পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, রংপুরের বদরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, রাজশাহীর পুঠিয়া ও কাটাখালী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, পাবনার চাটমোহর, কুষ্টিয়ার খোকসা, চুয়াডাঙ্গা, খুলনার চালনা, বরগুনার বেতাগী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, বরিশালের উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, নেত্রকোনার মদন, মানিকগঞ্জ, ঢাকার ধামরাই, সুনাগঞ্জের দিরাই, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডু।
গত ২২ নভেম্বর প্রথম ধাপের ২৫টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। নির্বাচনী মাঝপথে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী মারা যান। ওই পৌরসভায় ১৬ জানুয়ারি ভোটের দিন নির্ধারণ করে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ২৪টি পৌরসভায় আজ ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার ৪ ধাপে পৌর নির্বাচন করছে কমিশন। এর মধ্যে তিন ধাপে ১৫০টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ৬১ পৌরসভায় ভোট হবে। এর মধ্যে ২৯টি পৌরসভায় ইভিএম এবং ৩২ পৌরসভায় ব্যালটে ভোটগ্রহণ হবে।
আর তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ৩০ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে সর্বশেষ তফসিল দেয়া হয়েছে। বাকি যেসব পৌরসভা ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন উপযোগী হচ্ছে, সেসব এলাকায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ করা হবে।