প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশের অগ্রগতি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগ এবং তাঁর সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরার মাধ্যমে উন্নয়নে গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে উন্নয়নের ইস্যুগুলোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করার জন্য গণমাধ্যমের বিশেষ ভূমিকা কামনা করেছেন। প্রেস ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ(পিআইবি)-তে আয়োজিত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার(বাসস)জেলা সংবাদদাতাদের দু’দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্যোগ এবং অন্যান্য উন্নয়ন কর্মসূচি বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিভিন্ন সূচকে দেখা যাচ্ছে দেশ অন্যান্য কয়েকটি দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এবং সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের দিক থেকে ভারতসহ অগ্রসর ও বিকাশমান অর্থনীতিগুলোর তুলনায় বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, এবং অন্যান্য মেগা প্রকল্প নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় বার্তা সংস্থার(বাসস)ইনফোটেইনমেন্ট সার্ভিস এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের(আরডিসিডি)আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প‘শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতা’শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, তথ্য সচিব কামরুন নাহার ও আরডিসিডি সচিব মো রেজাউল আহসান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাসস’র বিশেষ সংবাদদাতা মাহফুজা জেসমিন।

আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প পরিচালক আকবর হোসেন প্রকল্পের রূপরেখা ও পটভূমি ব্যাখ্যা করেন এবং এর অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি ১০টি উদ্যোগের মধ্যে এখন ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে। পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাসস ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান ও চিফ রিপোর্টার তারেক আল নাসের এবং বার্তা সংস্থার সিনিয়র সাংবাদিকরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

হাছান বলেন, বাষ্প ইঞ্জিন, বিদ্যুৎ এবং কম্পিউটার আবিস্কার হওয়ার পর বিগত কয়েক শতাব্দীতে বিশ্ব তিনটি শিল্প বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেছে। তৃতীয় বিপ্লব না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ বা বিশ্বের এই অংশ পিছিয়ে ছিল। তিনি বলেন,‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’গড়ার পথে যাত্রা করে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। মন্ত্রী অবকাঠামো ও আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি একটি মানবিক সমাজ গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং গণমাধ্যমকে যথাযথ ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন যাতে‘জনগণ স্বার্থপর না হয়ে ওঠে বরং
আশপাশের এবং সমাজের অন্যদের সম্পর্কেও চিন্তা করে’।

তিনি বলেন,‘আমরা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন একটি সমাজ গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্যে, আমাদের নেতা(শেখ হাসিনা)একটি সমাজ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হয়েছে উল্লেখ করে হাছান বলেন, দেশ মানব উন্নয়ন সূচকসহ অনেক আর্থ-সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং গত ১১ বছরে অন্যান্য দেশের তুলনায় উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, সরকার শিক্ষা খাতে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সাল থেকে বিনামূল্যে বই বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই খাতকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও, মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে সরকার প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়েদের হাতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছে, যা বিশ্বে এক অনন্য প্রয়াস বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় ছিল। এখন দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান। মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মুজিব বর্ষের মধ্যে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে।

হাছান বলেন, বাংলাদেশ এখন নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে রোল মডেল। মাত্র ১০ বছর আগে দেশবাসী ভাবেনি, একজন মহিলা পুলিশ সুপার হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য নেতৃত্বের জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, একটি বাস্তবতা। তিনি বাসস-এর সাংবাদিকদের দেশবাসীর সামনে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরার আহ্বান জানান যাতে তারা সাফল্যের বিষয়গুলো জানতে পারে।
অধ্যাপক আরেফিন বলেছেন, সত্যতার বিকল্প নেই। প্রতিটি সাংবাদিকের উচিৎ সত্য প্রতিবেদন লেখা এবং এটি একজন প্রতিবেদকের মূল দায়িত্ব।

কামরুন নাহার বলেন, সাংবাদিকরা পর্যবেক্ষক এবং তারা সরকার ও জনগণের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা তুলে ধরেছেন। তথ্য সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রশিক্ষণটি অংশগ্রহণকারীদের ভালো প্রতিবেদক হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। বাসস-এর প্রধান সম্পাদক অংশগ্রহণকারীদের কর্মশালা থেকে অর্জিত জ্ঞান তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বিশেষত আসন্ন মুজিববর্ষে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান। আজাদ বলেন, মুজিব বছরের জন্য গণনা চলছে…আমাদের এখন অনেক কাজ করার আছে। তিন বিভাগের বাসস-এর মোট ২৪ জন সাংবাদিক প্রশিক্ষণে যোগ দেন। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান