কাতার সে দেশে থাকা বিশেষ কিছু বিদেশিকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিতে যাচ্ছে। সম্ভাব্য সুবিধাভোগীরা বলছেন, এটি দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি আরও বাড়িয়ে দিবে।
সম্প্রতি কাতারের মন্ত্রিসভায় এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, যারা কাতারি নারীদের বিয়ে করে বসবাস করছেন তাদের ছেলে-মেয়েরা এই সুযোগ নিতে পারবেন। যেসব প্রবাসী দেশটির জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তারাও এই সুযোগ নিতে পারবেন।
জঙ্গি ও ইরানকে সমর্থন ইস্যুতে দেশটির ওপর যখন সৌদি আরবের নেতৃত্বে উপসাগরীয় ৪ দেশের অবরোধ অব্যাহত আছে, ঠিক তখনই এই ধরনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কাতার।
মন্ত্রিসভার বিবৃতি দিয়ে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে বসবাস করা প্রবাসীদের বিশেষ শর্ত বিবেচনায় অভ্যন্তরীণ মন্ত্রিরা এর অনুমতিপত্র দিতে পারবেন।
সুবিধাভোগীরা রাষ্ট্রের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। এছাড়া তারা নিজস্ব সম্পদের মালিক হতে পারবেন। স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতেও তাদের কোনো সমস্যার মুখে পড়তে হবে না।
প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করেন- এমন কিছু বিশেষজ্ঞ গলফ টাইমসকে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সক্ষমতা ও উৎপাদনক্ষমতাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিবে।
তারা বলছেন, কাতারের মোট বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এর মধ্যে মাত্র ৩ লাখ ১৩ কাতারের স্থানীয় নাগরিক। দেশটিতে প্রবাসীদের অবস্থানে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, কাতারে বর্তমানে বাংলাদেশি রয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার।
‘বিশেষ’ প্রবাসীদের স্থায়ী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার যে পরিকল্পনা কাতার নিয়েছে তা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত শাহজাদ আহমেদ এ সিদ্ধান্তের জন্য কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত কার্যকরী উদ্যোগ।
ফিলিপাইন বিজনেস কাউন্সিল- কাতারের চেয়ারম্যান গ্রেগ লোয়ন বলেন, স্থায়ী বসবাসের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কাতারের অর্থনীতি ও সমাজের প্রতি জনগণের অবদানের স্বীকৃতির প্রতি একটি মহান সিদ্ধান্ত। এই সম্পর্ক এবং বন্ধন দেশটির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
দোহাভিত্তিক ভারতীয় উদ্যোক্তা এবং কাতারে বিরলা পাবলিক স্কুল -র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সি ভি রাপাই বলেন, কাতারে প্রবাসীদের স্থায়ী বসবাস সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা দেশটির জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও অবদান রাখবে।
ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইসিসি) -এর প্রাক্তন সভাপতি কে.আর. গিরিশ কুমার বলেন, স্থায়ী আবাসনের সুযোগ দেওয়া অসাধারণ একটি পদক্ষেপ। আমি এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপের জন্য কাতার সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আজকের বাজার: এলকে/এলকে ০৭ আগস্ট ২০১৬